পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীরামকৃষ্ণ পরমহংস। 89 নষ্টা স্ত্রীলোক, মাতাপিত প্ৰভৃতি সমুদয় পরিজন মধ্যে বাস করিয়া, এবং নানাবিধ গৃহকাৰ্য্যে সমস্ত দিন ব্যস্ত থাকিয়াও তাহার মন যেমন উপপতির প্রতি আকৃষ্ট থাকে ; হে সংসারী মানব! তুমিও সেইরূপ মাতাপিত প্ৰভৃতির মধ্যে থাকিয়া সমুদয় কাৰ্য্যে ব্যস্ত থাকি ; কিন্তু তোমার মনকে সেই হরির প্রতি আকৃষ্ট রাখিবার চেষ্টা করিও । ধনীদিগের গৃহে দাসিগণ প্রভুর সন্তানসন্ততিদিগকে মাতার ন্যায় লালনপালন করিয়া থাকে ; কিন্তু মনে মনে তাহারা নিশ্চয় জানে যে, ঐ সন্তানসন্ততিদিগের উপরে তাহদের কোন অধিকার নাই। হে মানব । তুমিও তোমার সন্তানসন্ততিদিগকে যন্ত্রের সহিত পালন করিও; কিন্তু মনে নিশ্চয় ধারণা করিতে চেষ্টা করিও যে, ঐ সকল কিছুই তোমার নহে। মই, বঁাশ, সিড়ী, দড়ি প্রভৃতি নানা উপায় দ্বারা যেমন অট্টালিকার ছাদে উঠা যায়, সেইরূপ ঈশ্বরের রাজ্যে যাইবারও নানাবিধ উপায় আছে। প্ৰত্যেক ধৰ্ম্মই এক একটা উপায় দেখাইয়া দিতেছে। প্রশ্ন হইল, সংসার ও ঈশ্বর উভয় কাৰ্য্য একত্রে কিরূপে সন্তবে ? বলিলেন, একটী স্ত্রীলোক এক হস্তে টেকীতে চিড়া দিতেছে, অপর হস্তে সন্তানকে বক্ষে ধরিয়া দুগ্ধপান করাইতেছে, মুখে হয় তা পথের কোন লোকের সঙ্গে চিড়িার হিসাব করিতেছে। এইরূপে সে অনেক কাজ করিতেছে বটে ; কিন্তু তাহার মনে মনে দৃষ্টি, যেন হস্তে ঢেঁকীট পড়িয়া না যায়। সংসারে থাকিয়া সকল কাৰ্য্য কর ; কিন্তু দৃষ্টি রাখিও, যেন র্তাহার পথ হইতে দূরে না পড়িয়া যাও। ম্প্রীং এর গদীর উপরে বসিলেই কুঞ্চিত হয় এবং উঠিলেই আবার সে স্বাভাবিক অবস্থায় পরিণত হয়। সংসারী মানবের মনেও সেইরূপ ধৰ্ম্মকথা যখন শুনে, তখন ধৰ্ম্মভাব প্ৰবল হয় ; কিন্তু সংসারে প্রবেশ । করিলে মনের আর সে ভাব থাকে না।