পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুদ্ধদেব । ଧର অবশ্যম্ভাবী, সেইরূপ জন্মগ্রহণ করিলে জীবের মৃত্যু অনিবাৰ্য্য। তরঙ্গিনী যেমন সাগরাভিমুখে সতত ধাবিত, জীবগণও সেইরূপ কালসাগরাভিমুখে নিয়ত অগ্রসর হইতেছে। আপনি এই কোলাহলপূর্ণ পাপ-সংসারের যেদিকে নিরীক্ষণ করিবেন, সেইদিকেই কেবল ক্ৰন্দনের ধ্বনি শুনিতে পাইবেন। ধনীর অট্টালিকা হইতে দরিদ্রের কুটার পর্য্যন্ত, তাপসের আশ্রম হইতে ঘোর বিষয়াসক্ত বিষয়ীর নিবাস-ভূমি পৰ্য্যন্ত, বিশেষ পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়া দেখিলে, কেবল হাহাকার ক্ৰন্দনের রোল শুনিতে পাইবেন। কান্না ভিন্ন সংসারে আর কিছুই নাই। বােধ হয়, কঁাদিবার জন্যই আমাদের সৃষ্টি হইয়াছে।” সিদ্ধাৰ্থ সারথির কথা শুনিয়া, দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া, রথ প্রত্যাবৰ্ত্তন করিতে বলেন। রথ প্রত্যাবৰ্ত্তিত হইলে যুবরাজ চিন্তাকুলাচিত্তে গৃহে আইসেন। সিদ্ধার্থ ঐ দিবস তাহার সুকোমল শয্যায় শয়ন করিয়া ভাবিতে ভাবিতে বালিয়াছিলেন, “কালি ! এ মহাশক্তি তুমি কোথায় পাইলে ? যেদিকে দৃষ্টি করি, সেইদিকেই তুমি। যে তোমার আবর্তে পড়িয়াছে, তাহাকেই ডুবাইয়াছ। এই যে সুকুমার শিশু মৃদু। মৃদু হাসিয়া খেলা করিতেছে, কে বলিতে পারে যে, কিছুদিন পরে তুমিই ঐ আনন্দ-বিস্ফারিত কোমল চক্ষু দুইটিতে দুঃখের জলপ্রপাত উৎপন্ন করিবে না ? অথবা ততদিন অপেক্ষা নাও করিতে পার। কাল ! এ সংসারে তোমার শাসন হইতে কি কেহই মুক্ত নহে ?” অপর এক দিবস সিদ্ধাৰ্থ রথারোহণে রাজবাটীর পূর্ব তোরণ দিয়া ভ্ৰমণে বহির্গত হন। কিছু দূর অগ্রসর হইলে, একজন সন্ন্যাসী তাহার নয়ন-পথে পতিত হন। র্তাহার সৌম্যমূৰ্ত্তি, সৰ্ব্বাঙ্গ বিভূতি-ভূষিত, মস্তকে জটাকলাপ, হস্তে কমণ্ডলু এবং ধৰ্ম্ম-চিন্তায় আসক্তি দেখিয়া সিদ্ধার্থ সারথিকে জিজ্ঞাসা করেন, “ছন্দক! ইনি কে ?” ছন্দক অতি বিনীতভাবে বলে, “কুমার! ইনি সন্ন্যাসী। ইনি আত্মীয়বর্গ, গৃহ ও বিষয়-বাসনা