পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R o জীবনী-সংগ্ৰহ MWAYANAY, পরিহার করিয়া ধৰ্ম্ম-চিন্তায় জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন। জগতের যাবতীয় মনুষ্যই ইহার আত্মীয় এবং ভিক্ষাই ইহার জীবিকা ।” ছন্দকের কথা শুনিয়া সিদ্ধাৰ্থ আনন্দপূর্ণস্বরে বলেন, “এতদিনে জানিলাম, ঐ সন্ন্যাসীর মত হইতে পারিলে সংসারে যথার্থ সুখী হওয়া যায়। রাজ্যভোগে চিত্তের শান্তি সম্পাদন করা যায় না । ছন্দক । রথ প্ৰত্যাবৰ্ত্তন কর। আর আমার ভ্ৰমণে ইচ্ছা নাই।” রথ প্ৰত্যাবৰ্ত্তিত হইলে, সিদ্ধাৰ্থ গৃহে আসিয়া শয়ন করেন। র্তাহার চিত্ত নানাবিধ চিন্তায় আলোড়িত হইতে থাকে। তিনি এইরূপ চিন্তা করেন, “যদিও প্ৰফুল্লকুসুমসদৃশ নিৰ্ম্মল পুত্ৰমুখ, পরমেশ্বরের পবিত্রতা ও আনন্দমূৰ্ত্তি স্মরণ করাইয়া দেয়, যদিও প্ৰেমময়ী প্ৰাণ-প্ৰতিমা সহধৰ্ম্মিণীর বিশুদ্ধ প্রেমযোগ, পরম পিতা ঈশ্বরের যোগানন্দের আভাসস্বরূপ হয়, কিন্তু আসক্তি পরিত্যাগ না করিলে এ সকল সৌন্দৰ্য্য বুঝিতে পারা যায় না ; তাই সংসারের অধিকাংশ মনুষ্যই ইন্দ্ৰিয়-উপভোগের নিমিত্ত স্ত্রী-পুত্রের সেবা করিয়া শোকতাপে দগ্ধীভূত হয়। যখন সংসারের সকল পদার্থই অনিত্য অস্থায়ী, কেহই চিরসঙ্গী নয়, তখন শরীরের স্বাদুৰ্ত্তি, পরিচ্ছদের গর্ব, সৌন্দৰ্য্যের মমতা, এবং বিদ্যার অহঙ্কার করি কেন ? পৃথিবীর সমুদয় ধাৰ্ম্মিক ও মহাপুরুষেরাই সংসারের অনিত্যতা চিন্তা করিয়া ধৰ্ম্মপথে অগ্রসর হইতে পারিয়াছিলেন। আমিও ধৰ্ম্মপথের পথিক হইব। প্রত্যহই অসংখ্য মানব জরাব্যাধি প্ৰপীড়িত হইয়া মৃত্যুর করালগ্ৰাসে প্রবিষ্ট হইতেছে। এই জরাব্যাধি ও মৃত্যুর করালগ্ৰাস হইতে উদ্ধার পাইবার অবশ্যই কোন উপায় আছে। আমাকে সেই অজ্ঞাত উপায়োদ্ভাবনের জন্য প্ৰাণপণে চেষ্টা করিতে হইবে।” সিদ্ধার্থ এইরূপ চিন্তা করিয়া সংসারাশ্রম পরিত্যাগ করাই স্থির সিদ্ধান্ত করেন ; কিন্তু পিতার এবং স্ত্রীর অজ্ঞাতসারে গৃহত্যাগ করিলে