পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুদ্ধদেব। SS পিতার এবং স্ত্রীর করুণা-প্ৰাণে দারুণ শেল বিদ্ধ হইবে, এই ভাবিয়া তিনি আপনার এই কঠোর অভিপ্ৰায় পিতা ও সহধৰ্ম্মিণীর নিকট ব্যক্ত করেন। পুত্রবৎসল মহারাজ শুদ্ধোদন পুত্রের এই হৃদয়-বিদারক প্ৰস্তাব শুনিবা মাত্র, তাহার বাকুরোধ হইয়া যায় ; তাহার। আর কথা কহিবার শক্তি থাকে নাই। বহুক্ষণ পরে তিনি পুত্রকে সম্বোধন করিয়া বলেন, “বৎস ! সংসার-ত্যাগে তোমার কি প্রয়োজন, তোমার কিসের দুঃখ, ংসারে তোমার কিসের অভাব ? তুমি অতুল ঐশ্বৰ্য্যের অধীশ্বর ; শত শত কলকণ্ঠ রমণী গীতধ্বনিতে, বীণার মধুর বাদ্যধ্বনিতে, তোমার চিত্ত বিনোদনের জন্য ব্যস্ত রহিয়াছে। শত সহস্ৰ দাসদাসী তোমার আজ্ঞাপালনে নিযুক্ত, গুণবতী রূপবতী গোপা তোমার জীবনের সহচরী, তবে তুমি কেন কি দুঃখে সংসার ছাড়িয়া বনে গমন করিবে ? আমি তোমাকে পাইয়া হস্তে স্বৰ্গলাভ করিয়াছি, তোমাকে পাইয়া আমি প্ৰাণসম পত্নীর মৃত্যু-শোক বিস্মৃত হইয়াছি ; তুমিই আমার সর্বস্ব ধন, তুমি যদি আমায় ছাড়িয়া যাও, তাহা হইলে আমি কখনই প্ৰাণে বঁচিব না ;” এই বলিতে বলিতে মহারাজের বাকুরোধ হইয়া যায়। সিদ্ধাৰ্থ পিতার কাতরোক্তি শুনিয়া কিয়ৎক্ষণ অশ্রুবিসর্জন করেন, পরে তিনি পিতাকে সাস্তুনা করিয়া বলেন, “পিতঃ ! আপনি আমাকে ব্যাধি ও মৃত্যু ইহাদিগের হস্ত হইতে পরিত্ৰাণ করিতে পারিলে, আমি কখনই সংসার পরিত্যাগ করিব না।” পুত্রের কথা শুনিয়া মহারাজ শুদ্ধোদন কিংকৰ্ত্তব্যবিমূঢ় হইয়া বলেন, “বৎস! প্ৰকৃতির নিয়ম লঙ্ঘন করিবার ক্ষমতা কাহার আছে ? মহা মহা যোগী কঠোর তপস্যা করিায়াও জরা, ব্যাধি ও মৃত্যুর হস্ত হইতে রক্ষা পান নাই। র্তাহারাও, প্রলোভনময় সংসার, মনুষ্যের ধৰ্ম্মসাধনের প্রতিকূল মনে করিয়া, কোলাহলশূন্য নির্জন গিরিকন্দির ও বৃক্ষরাজিসামাকুল অরণ্যে সাধনা করিয়া