পাতা:জীবনী সংগ্রহ - গনেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

MOR জীবনী-সংগ্ৰহ এবং সেই পরিবারস্থ অন্যান্য সকলের হৃদয়বিদারক উচ্চ ক্ৰন্দনের রোল গগনস্পর্শ করিতেছিল, ঠিক সেই সময়ে একজন ভিক্ষু * করাঙ্ক হেস্তে ঐ ধনীর দ্বারদেশে আসিয়া উপস্থিত হন। কৃষ্ণ গবাক্ষ হইতে, পরিধানে পীতবসন, হস্তে করাঙ্ক ও মুণ্ডিতমস্তক সন্ন্যাসীকে দেখিয়া, ভয় ও লজ্জা পরিহার পূর্বক দ্রুতগতিতে আসিয়া ক্ৰন্দন করিতে করিতে র্তাহার চরণযুগল জড়াইয়া ধরেন এবং বলেন, “সাধু! আপনারা দৈববলে বলীয়ান ; আমার একমাত্র জীবনসৰ্ব্বস্ব শিশু সন্তানের প্রাণ, দুর্দান্ত কাল হরণ করিয়াছে, আপনি মন্ত্রবলে তাহাকে জীবিত করিয়া দিন।” কৃষ্ণার বিলাপপূৰ্ণ বচন শ্রবণ করিয়া ভিক্ষু, তাহাকে বলেন, “সাধিব ! মরা মানুষ ব্যাচাইবার ক্ষমতা এখনও আমার জন্মায় নাই। আপনি যদি আপনার মৃত সন্তান লইয়া আমার গুরুদেবের নিকট গমন করিতে পারেন, তাহা হইলে তিনি আপনাকে সঞ্জীবনী ঔষধ প্ৰদান করিবেন।” কৃষ্ণ ভিক্ষুর কথায় আশ্বস্ত হইয়া বুদ্ধদেবের নিকট গমন করেন এবং যথাযথ সমস্ত বৰ্ণনা করিয়া ঔষধ প্রার্থনা করেন। বুদ্ধদেব কৃষ্ণাকে আশ্বস্ত করিয়া বলেন, “বৎসে ! আমি ইহার অতি উত্তম ঔষধ অবগত আছি ; কিন্তু আমার একটা বস্তুর অভাব হইতেছে, যদি তুমি তাহা আনিয়া দিতে পাের, তাহা হইলে তোমার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হইবে।” কৃষ্ণা অতি ব্যগ্রতার সহিত তাহাকে জিজ্ঞাসা করেন, “প্ৰভু! সে বস্তু কি ? আমার গৃহে কোন বস্তুরই অভাব নাই। স্বৰ্ণ, রৌপ্য, হীরক প্ৰভৃতি আপনি যাহা বলিবেন, আমি আপনাকে তাহাই আনিয়া দিব।” اه কৃষ্ণার কথায় বুদ্ধদেব বলেন, “আমার ও সকল বস্তুর আবশ্যক নাই, এক মুষ্টি সর্ষপ আনিতে পারিলেই তোমার পুত্র পুনর্জীবিত হইবে ; কিন্তু একটী কথা আছে,-যে পরিবারে কখনও কাহারও মৃত্যু হইয়াছে, সেই

  • বুদ্ধদেব শিষ্যদিগকে ‘ভিক্ষু’ বলিতেন এবং ভিক্ষু-সমাজকে সঙ্ঘ বলিতেন।