তাঁদের একটি অপরাহ্নে আমাদের বাড়িতে চায়ে নিমন্ত্রণ করলুম। তাঁরা যখন এলেন, আমার ক্লাবের ছেলেরা স্ব স্ব অস্ত্র হাতে তাঁদের guard of honour দিলে এবং চা-পানের পর মাঠে তাদের অস্ত্রখেলা প্রদর্শন করলুম। মহারাজাকে গল্প করলুম প্রায় ৭।৮ বছর আগে সোলাপুরে তাঁর সভাপতিত্বে মহারাষ্ট্রীয় ক্লাবের খেলা দেখে আমার মনে এই ক্লাব খোলার প্রথম সূচনা হয়েছিল। বাড়ির ভিতরে উঠতে প্রথম ঘরেই জাপানী আর্টিস্টের হাতে আঁকা আমার ফরমাসী কালীর একটি অপূর্ব মূর্তি ছিল—সেখানি আজও আছে আমার বাড়িতে। ঘরের অন্যান্য দেওয়ালে আমার মা-বাবার ছবির সঙ্গে সঙ্গে আমারও একখানা বড় ছবি ছিল—খোলা চুলের প্রাচুর্যে বোধহয় দৃষ্টি আকর্ষণ করা—সে ছবি অনেক জায়গায় বেরিয়েছে, বোধহয় যোগেন গুপ্ত মহাশয়ের “বঙ্গের মহিলা কবি” পুস্তকেও আছে। বরোদা-রাজকে আমি কালীর ছবির দিকে নিয়ে গিয়ে ভাল করে দেখতে বললুম। তিনি আমার ছবির দিকে ফিরে হেসে বললেন—“কোন্ কালী দেখব? এই কালী না ঐ কালী?”
॥ উনিশ॥
জাতীয় দৈন্যের নানা দিক
নতুন মামার স্থাপিত সঙ্গীতসমাজে বরোদার রাজা নিমন্ত্রিত হয়ে গেলেন। সেটি সেকালের বনেদী ঘরের ধনী সৌখীন পুরুষদের গান-বাজনা ও থিয়েটারের আড্ডা। একবার “বাল্মীকি প্রতিভা’’ অভিনয় হচ্ছিল সেখানে। তাতে বৌবাজারের যোগেন মল্লিক মহাশয় বাল্মীকি সেজেছিলেন। তাঁর পার্টে যখন গান এল—
‘‘যাও লক্ষী অলকায়!
যাও লক্ষী অমরায়!
এ বনে এসোনা, এসোনা,
এসোনা এ ‘দীনজন’ কুটীরে—’’