পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার . . বুনের সুযােগ পাওয়া কঠিন। আমার সম্মুখের ঘাসন ঈষৎ নড়ে উতই 'তামার সমস্ত শরীর যেন সজীব হয়ে উঠল। আমি নিশ্বাস একাগ্র দৃষ্টিতে প্রতীক্ষা করে রইলাম। দু'এক মুণ্ডের মধ্যেই একটি প্রকাণ্ড আশ্চর্য সুনৱ শৰ্দলজের উত্তমাঙ্গ আমার দৃষ্টিগোচর হল। তখন সে দূরে, অনেক দূরে। সম্মুখের খােলা মাঠ দিয়ে সে যে আরও কাছে এগিয়ে আসলে তার কোন সম্ভাবনা ছিল না । কিন্তু আমার দৃষ্টি, মুষ্টি এবং মস্তিষ্ক সবই ঠিক ছিল-~-০৪৬৫নং গুলি ছুটে গেল ! ব্যারাজ কোথায় ? কোথায় অদৃশ্য হলেন? না অদৃশ্য হননি! বিরল তৃণরাজির মধ্য হতে দেখতে পেলাম তিনি ধরা শয় গ্রহণ করেছেন বিশাল শরীর নি ; জীবনের চিহ্ন মাত্র নাই। মাহুতকে হুকু দিলাম, “বাড়াও” । ডানচোখের উপর একটি সামান্য ক্ষতচিহ্ন, নাক দিয়ে মস্তিষ্ক-মিশ্রিত রক্তধারা বয়েসছে; শরীর পাথরের মত নিশ্চল, অসাত ! স্নেহের লকা ক্যাপ, | ম্যপ্রদেশের সীমান্তে আমারই পরিচিত কোন স্থানে পাশ্ববর্তী দেশ হতে একটা ব্যাঞ্জ উপস্থিত হয়ে সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে অনেক গুলি না। হ্যা করেছে, এই ৰা পেলাম। লােকজনে ভারি ভয় পেয়ে গেল। পাহাড়ে জঙ্গণে তাদের কাঠভাঙ্গা, ফল কুড়িয় আ. এক রকম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বলেই হয়। নিজে অলক্ষ্য থেকে শিকার ধরবার পক্ষে সেই বাঞ্জটির বিশেষ সুবিধাজনক অনেকগুলি জায়গা জুটেছিল। যে পথ বেয়ে গপ্রয় গাড়ীর সারি ঘুরে আসে সেই খানে লুকিয়ে বসে তিনি অনেক বলি সংগ্রহ করেছেন, শুনলাম। তিনি বাঘিনী হলেও শিকারী কম ছিলেন ,-গাই বলদ ছাগল ভেড়া সবই উজাড় করছিলেন। স্থানীয় শিকারী তাকে মারবার বেশ একটি সুযােগ পেয়েছিল। সন্ধ্যাবেলায় সে তখন মৃত গরুটি ভক্ষণের চেষ্টায় ফিরেছিল। কিন্তু বেচারা শিকারীর কাছে যে কাৰ্তস (cartridge) ছিল তা ফেটে গুলি বাহির হয় নি। বাঘিনী সেই চমকে পলায়ন দিলে আমরণ সে প্রলােভনে ভেলে নি বা যাঁদে পা বাড়ায় নি। কা৪ে৭ শিকল আমরা যেমন স্বা, তাতে ধান ভাব আননের সন্ধানে যাওয়া আমাদের পক্ষে সহজ নয়। যদিও এ কথা বড় একটা কেউ বিশ্বাস করতে চ.ইব না জা।িকেন আইন ব্যবসায়ের নাম স্বাব্যস। সে যাই হােক ব্যবসাজাবীর জীবন স্বান •য়, কেননা তিনি মক্কেলের কাছে বাধা। যার পয়দা খান তার কাজ না বাজিয়ে তার আর কোন দিকে মনােযােগ করবার সুযোগ হয় না। আমি মাঝে মাকাে কাজের মধ্যেই শিকারের সুযোগ করে নি। তাতে অনেক অসুবিধা ভােগ করতে হয়। তাঁটের কড়িও মগ খরচ হয় না।--আর একথা আগে হতেই বলে রাখা ভাল, এ বস্তুর প্রাচুর্য্য আমার বড় একটা নেই। গুলির অর্থ আর দেহের সামর্থ্য যথেষ্ট ব্যয় করে মফঃস্বলে মামলা করতে গিয়ে সপ্তাহান্তে যে দিন কাছারী বন্ধ থাকে আমি সেই অবসরে দু একবার শিকারের যােগাড় করেছি। মনি:্যাগ খালি হয়েছেবটে কিন্তু শিকারের ঝোল, বা ভরেছি। একবার একজন জজ মজা করে আমায় বলেছিলেন মফস্বলে আমায় দুই শিকার জোটে—এক মক্কেল, দ্বিতীয় বাঘ। তঁার বােৰ হয় মনে হয়েছিল পুরাণ ব্যাধি মত এ দুটোই আমায় পেয় বসেছে। আমি যখন প্রথম ব্যারিষ্টারী ব্যবসা আরম্ভ করি তখন আমার দু’একজন হিতৈষী মক্কেলদের বােঝাবার চেষ্টা করেছিলেন ইনের চেয়ে শিকারেই আমার বুদ্ধিটা খেলে ভাল। যে সব মানুষের শিকার-ৰাতিক আছে ইংরাজ তাদের প্রতি একটু পক্ষপাতী। ছুটির সম্বন্ধে মফস্বলের কাছারীর চেয়ে হাইকোর্টে আমাদের ভাগ্য ভাল। সেখানকার মত চাঁদ দেখে