পাতা:তত্ত্বকথা.pdf/৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তত্ত্ব কথা।
৪৯

পরম সার কথাটী জগৎকে শুনিয়ে দিলেন। তিনি বুঝ্‌লেন না যে সত্য দ্বৈতও বটে, এবং অদ্বৈতও বটে; কোনও একটার মধ্যে সত্যকে রুখে রাখা যায়না। দ্বৈতের মধ্যে রুখতে গেলে সে অদ্বৈতের মধ্যে গিয়ে পড়ে আর অদ্বৈতের মধ্যে রুখতে গেলে সে দ্বৈতের মধ্যে এসে পড়ে। বৈষ্ণব সিদ্ধান্তের মধ্যেও এই অসীম ও সসীমেরই মিলনের কথাটি নানা রসে রহস্যময় হইয়া রহিয়াছে। একই অদ্বয় থেকে রাধাকৃষ্ণ বেরিয়ে এসেছেন, এবং তাঁদেরই রাসযাত্রায় ব্রজকুঞ্জ ভরপুর। ব্যক্ত অব্যক্তের কি অদ্ভুত মিলন! “পততি পতত্রে বিচলিত পত্রে,” রাধিক কৃষ্ণেরই অপেক্ষা করেন; কৃষ্ণও কুঞ্জে কুঞ্জে রাধিকারই প্রেম ভিক্ষা করিয়া বেড়ান। কুঞ্জে কুঞ্জে তিনি বাঁশী বাজান, আর ঘরে ঘরে গোপিকারা সমস্ত গৃহকাষের মধ্যে ব্যাকুল হয়ে পড়ে। যেই তাঁর বাঁশী বাজে, অমনি তারা “চমকিত মন চকিত শ্রবণ” হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তাদের মন কোথায় উধাও হয়ে যায়, কলের মতন কায করিতে যায়, পদে পদে ভুল হইতে থাকে। স্তনকুঙ্কুম দিয়া কাজল পরিতে যায়, আর কাজলের কালি স্তনে মাখাইয়া ফেলে।

(8)