পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

· ዓ8 _তত্ত্ববােধিনী পত্রিকা १७, कन्न ७ डीभ প্রচার করিতেছি বটে, কিন্তু এত করিয়াও সেই তৈলকারের আবদ্ধ-চক্ষু বলীবদের ন্যায় যেখান হইতে যাত্রা করিতেছি, ংসারচক্রে ঘুরিয়া ঘুরিয়া আবার সেই খানেই আসিয়া উপস্থিত হইতেছি । স্মৃতির বলে পঠিত জ্ঞানের বিষয়কে প্রতিক্ষেপ করা, তর্কের বলে বিরুদ্ধবাদীকে পরাস্ত করা, বক্তৃতার মোহিনী শক্তিতে লোকের চিত্তকে আকর্ষণ এবং সকল প্রকার ধৰ্ম্মের অভিনয় করিয়া আপাততঃ কীৰ্ত্তি রক্ষা করা যায় বটে, কিন্তু ধৰ্ম্ম সাধনের উদ্দেশ্য যে সংসার ক্লেশ নিবারণ ও ব্রহ্মলাভ তাহা তাহাতে সিদ্ধ হয় না । অতএব আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য যে প্রাণের যত্ন দিয়া সেই সকল উপায় অবলম্বন করিব যাহা এই তপঃসাধ্য ধৰ্ম্মের পক্ষে যথেষ্ট অনুকূল। গণনার অতীত সময় হইতে ভারতবর্ষের যে সকল অtর্য্যেরা বংশপরম্পর অধ্যাত্ম যোগে রত থাকিতেন, শান্ত, দান্ত, উপরত, তিতিক্ষু সমাহিত হইয়া আপনাতেই পরমাত্মাকে দর্শন করিতেন ; সত্যকে পিতার ন্যায়, ধৰ্ম্মকে মাতার ন্যায় ভক্তি করিতেন ও শুভ কৰ্ম্মকে পুত্রের ন্যায় পালন করিতেন, শ্রদ্ধার সহিত দান করিতেন, পিতা, মাতা ও আচার্য্যকে দেবতার ন্যায় সম্মান করিতেন, জ্ঞানী ধাৰ্ম্মিক ব্যক্তিদিগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন পূর্বক তাহাদিগের আচরিত সাধু কৰ্ম্ম সকলের আচরণ করিতেন, আমরা তাহাদিগেরই জীবনচরিত্রকে আদর্শ করিয়া তদনুসারে জীবন গঠন করিতে শিক্ষা করিব ইহাই অামাদিগের এই উপাসনা সভা স্থাপনের উদেশ্য । যিনি সাধক জ্ঞানী তিনি ভারত বর্মীয় হউন বা পারস্যদেশীয়ই হউন" তিনিই আমাদের ভক্তির পাত্র। যাহ। সত্য বলিয়া বুঝিব সমাজের বা স্বার্থের ভয়ে কদাচ তাহা গোপন করিয়া অন্যথাচরণ করিব না । কপটতার ন্যায় মহাপাপ আর নাই। আমাদের মধ্যে কোন সভাপতি বা নিয়মকর্তার সভা হইবে না । আত্মবান সকল মনুষ্যেরই সেই আত্মদ পরমেশ্বরের উপাসনায় অধিকার আছে জানিয়া, পরম্পর পরস্পরকে ধৰ্ম্মবন্ধু ও ধৰ্ম্মপথের সহযাত্রী জানিয়া, একত্রে তাহার উপাসনা ধ্যান ধারণা করিব । কিন্তু আমাদিগের মধ্যে র্যাহারা ধৰ্ম্মে জ্ঞানেও সাধনায় উন্নত র্তাহাদিগের সাধু বাক্য সকলের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করিয়৷ তদনুসারে কার্য্য করিব। আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে পৌত্তলিকতা সম্পূর্ণ রূপে পরিত্যাগ কবিব কিন্তু তাহা লইয়। অতিবাদ রটনা করিব না। আমাদের পরম ভক্তিভাজন প্রধান ধৰ্ম্মাচার্য শ্ৰীমন্মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের প্রবর্তিত ব্রহ্মোপাসনা প্রণালীতে আমরা আর্য্য ঋষিদিগের গভীর অধ্যাত্মযোগের উপদেশ পাই, অতএব উক্ত প্রণালী আমাদের উপাসনায় অবলম্বন করিব । জাতীয় অাচার,জাতীয় প্রকৃতি আমাদিগের পরিত্যজ্য নহে । কিন্তু তাছাতে যে সকল মলিনতা আছে তাহা ক্ষালন করা কর্তব্য মনে করি। মহৰ্ষির অনুষ্ঠান পদ্ধতি এই জন্যই আমাদের গৃহ্য অনুষ্ঠানে গ্রহণ করিব । আমাদের সার কথা এই যে উদ্দেশ্য নির্বাচন অপেক্ষা উদ্দেশ্য সাধনের প্রতি আমাদের প্রাণ মন অধিক সময় নিযুক্ত থাকিবে । এইক্ষণে আমরা আমাদের সেই বন্ধু জনিত ও বিধাত পুরুষের নিকটে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি যে, যে কাৰ্য্য সাধনের জন্য তিনি আমাদের প্রতি ইঙ্গিত করিলেন তৎসাধনের জন্য