১১২৩ তত্ত্ববোধিনী পত্রিক יוס ג .56 9יג ফেলিতে পারিলেই গোড়ী-বন্ধনের দায় হইতে এ যাত্রা নিস্কৃতি পাই, এবং সেই দৃঢ় ভিত্তিমূলের উপরে ভর করিয়া—বৰ্ত্তমান বঙ্গসমাজের রোগই বা কিরূপ, আর, তাহার কবিরাজি চিকিৎসা-প্রণালীই বা কিরূপ, তাহার আলোচনা-কার্য্যে নিশ্চিন্ত মনে প্রবৃত্ত হই । প্রথম ; ত্রিগুণের গুণ-পরিচয় । ত্রিগুণের নাম শুনিয়া আপনারা হয় তো মনে করিতেছেন—“না জানি কি একটা ত্রিশূলধারী দার্শনিক বিকট-মূর্তি আসিতেছে— তাহার সে বিরূপাক্ষ-দৃষ্টিতে একবার সে আমাদের মুখের পানে খটমটু করিয়া তাকাইলেই আমাদের বুদ্ধিশুদ্ধি উড়িয়া যাইবে !” কিন্তু র্তাহাকে আপনারা একবার চক্ষে দেখিলেই, আপনাদের সে ভ্রম ঘুচিয়া গিয়া—উণ্টা তখন আপনার আtমাকে এরূপ না বলিলে বাচি যে, “এই তোমার সত্ত্ব রজ স্তমোগুণ – এ’র জন্য এত তুমুল কাণ্ড ! আমাদের স্তন্যপানের বয়স হইতেই এর সঙ্গে তো আমরা একত্রে বাস করিয়া আসিতেছি ; এমন কি—এর সঙ্গে আমরা মাতৃগর্ভ হইতে একত্রে ভূমিষ্ঠ হইয়াছি বলিলেই হয় ।” এই দেখুন—ত্রিগুণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শুভ্র বেশে আপনাদের সমক্ষে দেখা দিতেছে ; —তমোগুণ কি ? না বহির্জগতে রাত্রি এবং অন্তর্জগতে নিদ্রা ; রজোগুণ কি ? না বহির্জগতে দিব। এবং অন্তর্জগতে কৰ্ম্মচেষ্টা ; সত্ত্ব-গুণ কি ? না বহির্জগতে সন্ধ্যা এবং অন্তর্জগতে চিন্তা; তাহার মধ্যে প্রাতঃসন্ধ্যার সহিত তত্ত্বচিন্তা এবং ঈশ্বরীরাধন ; আর, সায়ংসন্ধ্যার সহিত আরাম-চিন্তা এবং ক্রীড়া কৌতুক সবিশেষ উপযোগী। চিন্ত৷ চেষ্টা এবং নিদ্রা এই তিনটিই ত্রিগুণ-চক্র; সংক্ষেপে—গুণ-বৃত্ত ; বৃত্ত—কি না চক্র । চিন্তা চেষ্টা এবং নিদ্রা অন্তর্জগতে বৃত্তের =ഇബ ন্যায় পুনঃ পুনঃ আবর্তিত হয়, আর, বৃত্তের ন্যায় আবর্তিত হয় বলিয়াই উহার প্রধানতঃ বৃত্তি-শব্দের বাচ্য । বাহিরে যেমন দিন রাত্রি--অন্তরে তেমনি মনোবৃত্তি—উভয়েই উভয়ের সঙ্গে লয় তান মিলাইয়া পুনঃ পুনঃ আবর্তিত হইতেছে। বহির্জগতে যখন রাত্রি আগমন করে, অন্তর্জগতে তখন নিদ্রা আগমন করে ; বহির্জগতে যখন চন্দ্রমা অস্তমিত হইয়া অরুণ-সারথি আবিভূত হয়, অন্তর্জগতে তখন নিদ্রা ভাঙিয়া গিয়া ধ্যান আবিভূত হয় ; বহির্জগতে যখন প্রভাত অস্তমিত হইয়া মধ্যাহ্ন দিব আবিভূত হয়, অন্তর্জগতে তখন ধ্যান ভাঙিয়া গিয়া কৰ্ম্ম-চেষ্টা আবিভূত হয় ; এইরূপে নিদ্রা চিন্তা এবং চেষ্টা বৃত্তের ন্যায় একে একে আবর্তিত হয়; আর, বৃত্তের ন্যায় আবৰ্ত্তিত হয় বলিয়াই উহার প্রধানত বৃত্তি শব্দের বাচ্য; মনুষ্যের অার আর যত প্রকার মনোবৃত্তি আছে, সমস্তই ঐ তিনটি মূল-বৃত্তির ডালপালা ; যেমন চিন্তার ডালপালা—কল্পনা স্মৃতি যুক্তি ইত্যাদি ; চেষ্টার ডালপালা—প্রযত্ন উদ্যম অধ্যবসায় ইত্যাদি ; নিদ্রার ডালপালা—আলস্য অবসাদ বিলাস ইত্যাদি । গুণ-বৃত্তই –ত্রিগুণ-চক্রই—মনের তিনটি মূলতম বৃত্তি ; আর, সে তিনটি বৃত্তি পরম্পরের সহিত সহস্ৰ জড়াজড়ি করিয়া থাকিলেও তিনের এ’র ও’র তা’র মধ্যে পার্থক্য উপলব্ধি করিতে আমরা কিছুমাত্র বাধা অনুভব করি না । চেষ্টার সঙ্গে যদিচ কখনো বা চিন্তা জড়ানো থাকে ( যেমন কৰ্ম্ম-চেষ্টার সঙ্গে অন্ন-চিন্তা, ) কখনো বা নিদ্রা জড়ানো থাকে (যেমন পরিশ্রাস্ত পাখা-বেহারার পাখাটানার সঙ্গে নিদ্রা) ; নিদ্রার সঙ্গে যদিচ কখনো বা
