পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ 2 যন্ত্র—ঈশ্বর শঙ্কুস্বরূপ হইয়া সমুদয় ধারণ করিয়া রহিয়াছেন । এই সৌর জগতের পরস্পরের মধ্যে একটা ঘনিষ্টতম যোগ রহিয়াছে। র্তাহার পালনী শক্তি এমনই আশ্চৰ্য্য। পৃথিবী একটা স্থপ্রকাণ্ড বেলুন যন্ত্র। পৃথিবীর দ্রুতগতির বিরাম নাই ! ইহার উপরে ভূলোকনিবাসী যাৰতীয় জীবগণ আপনাপন অন্ন পান লাভ করিয়া সুখে কালযাপন করিতেছে, অথচ ইহা হইতে পতনের আশঙ্কা নাই। র্তাহার কৌশল কি আশ্চর্য্য ! এই পৃথিবী অতি পূর্বে একটি স্বপ্ৰকাণ্ড অগ্নি-গোলক ছিল । জীবজন্তু ওষধি প্রভূতির চিন্তু মাত্র দেখা যাইত না । ক্রমে পৃথিবীর গাত্রে আচ্ছাদন (Crust) পড়িল । ভিতরে প্রচণ্ড অগ্নি—উত্তপ্ত দ্রবধাতু; বাহিরে অগ্নিময় অপেক্ষাকৃত কঠিন অবরণ। সূৰ্য্যও তখন ঘোর বাষ্পময় মেঘে আবৃত । অগ্নির উত্তাপে পৃথিবী হইতে বাষ্প উত্থিত হইয়া পুনরায় জলরূপে পড়িতে লাগিল। এই সময়ে পৃথিবীর মধ্যে অতি ভয়ঙ্কর গোলমাল চলিতেছিল । একদিকে যেমন ঘোরতর বৃষ্টি পড়িতে লাগিল, তেমনি আবার আগ্নেয় গিরি হইতে অগ্নি পৃথিবীর আচ্ছাদন ভেদ করিয়া উঠিতে লাগিল ; চতুদিকে ভয়ানক ভূমিকম্প হইতে লাগিল ; কতক স্থান বা উপরে চলিয়া গেল—পৰ্ব্বত হইল ; কতক স্থান বা গৰ্ত্ত হইয়া গেল—জলের আধার সমুদ্র হইল। কিন্তু তথাপি পৃথিবীর গতির বিরাম নাই। পৃথিবী জলও স্থলে বিভক্ত হইয়া ক্রমে শীতল হইয়া আসিতে লাগিল । এইরূপে যুগযুগান্তর চলিয়া গেল । ক্রমে কীটাণু শঙ্খ প্রভৃতি জলজন্তুর স্বষ্টি আরম্ভ হইল। ক্রমে মকর, কুম্ভীর -- তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা הין ש ל השף eל প্রভৃতি প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড জলজন্তর স্থষ্টি হইল । তাহার পরে যখন ক্রমে স্থলভাগ অরণ্যময় হইয়া উঠিল, তখন আবার সেই অরণ্যের উপযুক্ত স্থপ্রকাণ্ড হস্তী (mammoth) প্রভৃতির উৎপত্তি হইল। কিন্তু তখনও অগ্ন্যুৎপাতের বিরাম নাই। ভূগর্ভস্থ দ্রব ধাতু সমূহের আলোড়নে উচ্চস্থান নিম্ন হইল, নিম্নস্থান উচ্চ হইল, সমুদ্র পৰ্ব্বতে, পৰ্ব্বত সমুদ্রে পরিণত হইল। সেই যুগপরিবর্তন কালের ঘোর মহাপ্রলয় কাণ্ডের নিদর্শন বহুশতাব্দী পরে আজও আমরা প্রত্যক্ষ করিতেছি । হিমালয়-সমান অভ্রভেদী পৰ্ব্বতের উন্নততম চূড়ায় আজও আমরা সমুদ্রজাত জীবজন্তুর অস্থি-আবরণ বিস্তর দেখিতে পাই । এই সময়ে প্রচণ্ড বাত্যার প্রভাবে বৃক্ষরাজি নিৰ্ম্মল ङ्ड्रेशा ভূপৃষ্ঠে নিপতিত হইল এবং ভবিষ্যতে পাথুরিয়া কয়লারূপে মনুষ্যের অশেষ উপ কার সাধন করিবার জন্য প্রোথিত রহিল । সমুদ্রস্থিত শঙ্খ প্রবাল স্থানে স্থানে মৃত হইয়া রাশীকৃত হইতে লাগিল ; আবার তাহাদের সন্তান সন্ততি ঐ গুলির উপরেই প্রাণত্যাগ করিয়া প্রবালন্ত,প পরিবৰ্দ্ধিত করিতে লাগিল এবং এইরূপে ক্রমে ক্রমে প্রবাল দ্বীপে পরিণত হইল। ক্রমে ওষধি বনস্পতির জন্ম, জীবজন্তুর আবির্ভাব নূতন শোভায়, নূতন সৌন্দর্য্যে পৃথিবীকে আলোকিত করিয়া তুলিল। অগ্নিময় গোলক হইতে এই শোভন স্বন্দর পৃথিবীর স্বষ্টি । কি আশ্চর্য্য কৌশল এই মর্ত্যলোককে শোভাসৌন্দর্য্যে ভূষিত করিল। এইরূপে কত যুগ গিয়াছে, তবে এই পৃথিবী বর্তমান অবস্থায় আসিয়াছে। পৃথিবীর বর্তমান অবস্থা দেখিয়া স্পষ্টই বোধ হয় যে, যেমন উত্তর আমেরিকার সহিত দক্ষিণ আমেরিকা সংযুক্ত আছে,