পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8९ তত্ত্ববােধিনী পত্রিক _ দেখিতে দেখিতে এমন বাটীও পড়িয়া গিয়া, যে সকল বস্তু দ্বারা প্রস্তুত হইয়াছিল, অবশেষে তাহাতেই পরিণত হয় ; কেবল তাহাই নহে, সেই বালি চূৰ্ণ কিছুই থাকে না, সমস্তই মাটী হইয়া যায়। এই সকল দেখিয়া কেমন বুঝা যাইতেছে যে জগতের কিছুরই স্থিরতা নাই। এই যে এমন সুন্দর অট্টালিকাবিশিষ্ট মহানগরী আছে, হঠাৎ যদি সেই লিসবনের ভূমিকম্প উপস্থিত হয়—তখন এই সকল গৰ্ব্বময় ধূলিরাশি কোথায় থাকিবে ? বাহির হইতে শত সহস্র দুঃখ ক্লেশ আৰ্ত্তস্বরে ক্ৰন্দন করিয়াও যে রাজপ্রাসাদের অন্তরে প্রবেশ করিতে পারে নাই, হয়তো আজ সেই গৰ্ব্বিত রাজপ্রাসাদ সহসা হ্রদে পরিণত হইল। যে খানে পুষ্করিণী ছিল, তাহ হয় তো পৰ্ব্বতে পরিণত হইল। এইরূপ চিরপরিবর্তন সম্মুখে দেখিয়াও কি আমাদিগের অন্তরে ভয় হয় না ? এমন কি মনে হয় না যে, আজ আমি আপনার সৌন্দর্য্যমদে আপনার ঐশ্বৰ্য্য-মদে মত্ত হইয়া আছি, কিন্তু আর কিছু দিন পরে সে সমস্তই কালের করাল গ্রাসে পতিত হইবে, কাহারো কোনো চিহ্ন মাত্র ও অবশিষ্ট থাকিবে না । এইরূপ ভয়সংকুল অনিত্য সংসারের মোহপাশ হইতে উভীর্ণ হইবার জন্য হে সৎস্বরূপ, হে ধ্রুব সত্য সনাতন পরব্রহ্ম, আজ তোমাকে সকাতরে ডাকিতেছি—তুমি এই অসৎ পরিবর্তনশীল পৃথিবী হইতে আমাকে তোমারি পথে লইয়া যাও । কেবলি যে জড়জগতেই পরিবর্তন দেখিতে পাই, তাহা নহে ; আমাদের মনের ভিতরেও কি ঘোরতর পরিবর্তনের কাৰ্য্য চলিয়াছে। সেই শৈশব কাল ° झञ्च=ञ्ज - mmm mmmm... m ১৩ কল্প, ১ ভাগ --- =- =- = হইতে এই আজ পর্য্যন্ত, পরিবর্তনের স্রোতে পড়িয়া বিন্দুপরিমিত মন কত সহস্ৰ চিন্তার গুরুভার বহন না করিয়াছে ! আবার ভাবিয়া দেখিলে বিহবল হইয়া পড়িতে হয় যে, এইরূপ সহস্ৰ সহস্র প্রকারের চিন্তা কেবল অামারই মনের বিশেষ ধৰ্ম্ম নহে কিন্তু এই জগতে যে কোটি কোটি লোক বাস করিতেছে, সকলেরই ইহা সাধারণ ধৰ্ম্ম । পরিবর্তনের প্রবাহ কেমন আশ্চর্য্য ! কিন্তু এই চিরপরিবর্তনের মধ্যে, এই নানা পরিবর্তনের মধ্যে কি অপরিবর্তনীয় একমাত্র কেহ আছেন বলিয়া মনে হয় না ? এই শুধুই পরিবর্তনের সম্মুখে দাড়াইতে হৃদয় কি কম্পিত হয় না এবং কম্পিত হইয়া কি এক “অতি ধীর গম্ভীর, আপনে আপনি স্থির’ মহান পুরুষের প্রতি ধাবিত হয় না ? বাস্তবিক কি এই পরিবর্তনশীল জগতের পশ্চাতে অপরিবর্তনীয় কেহ নাই ? এই দেখিতেছি আমার শরীর—ইহার না জানি কতই পরিবর্তন হইতেছে । আজ এই খানে ক্ষত, কাল ওইখানে ক্ষত ; আজ এই অসুখ, কাল ওই অস্থখ ; প্রতি পলে পলে, প্রতি মুহুর্তে মুহুর্তে এই আtমাদের ক্ষণভঙ্গুর শরীরে যে কত পরিবর্তন সংঘটিত হইতেছে, তাহা কে বলিবে ? কিন্তু এই শরীর পরিবর্তনের সঙ্গে“আমি”রও কি পরিবর্তন হইতেছে ? এই “আমি” টুকু স্থির রহিয়াছে বলিয়াই আমার শরীর, এত বিঘ্ন বিপত্তি, এত পরিবর্তনের মাঝখানেও “আমার” শরীররূপে বিদ্যমান এবং এই “আমার” শরীর আছে বলিয়াই তাহাতে হিরন্ময় কোষ আত্মা বিশুদ্ধ পবিত্র সেই পরব্রহ্মের আসনরূপে অবস্থান করিতে পারিয়াছে। যদি শরীরের ন্যায় “আমি”ও