পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و او بیا و csN অনায়াস-সাধ্য হইয়া উঠিবে। ব্রহ্মপ্রীতি যদি একবার আমাদিগের হৃদয়ে বদ্ধমূল হইয়া যায়, তাহা হইলে আমরা নিভীকচিত্তে বজদৃঢ় স্বরে ঘোষণা করিতে পারি যে, যদি আত্মীয় স্বজন কর্তৃক পরিত্যক্ত হই, যদি লোকসমাজ কর্তৃক তাড়িত, লা বেহালা ব্রাহ্মসমাজ স্থিত, বহিষ্কৃত হই, এমন কি, যদি শরীর । হইতে অশেষ যন্ত্রণা দিয়া প্রাণ উৎকীর্ণ করিয়া লওয়া হয়, তথাপি সেই প্রিয়তম প্রাণসখী পরমেশ্বরকে পরিত্যাগ করিতে পারিব না। তখন আমাদিগের হৃদয়ে এমন বল আসিবে যে, সংসামের সকল প্রকার ভয়কে তুচ্ছ করিয়া আমরা আমাদিগের কি গৃহ অনুষ্ঠানে, কি সামাজিক অনুষ্ঠানে, কি অস্তরে কি বাহিরে সকল স্থানে, সকল কার্য্যে সেই অমূৰ্ত্তমজমব্যয়ং, মুর্তিবিহীন, জন্মবিহীন, অবিনাশী পরব্রহ্মকেই প্রতিষ্ঠিত করিতে সমর্থ হইব ; সকল কাৰ্য্য র্তাহারি হস্তে সমর্পণ করিয়া, সন্তান যেমন মাতৃক্রোড়ে থাকিয়া নির্ভয় হয়, সেইরূপ নির্ভয় হইব এবং তাহার প্রসন্ন মুখ দর্শন করিয়া চরিতার্থ হইব । এক সময়ে যখন প্রটেষ্টাণ্ট খৃষ্টীয় সম্প্রদায় সবে মাত্র দেখা দিয়াছে, তখন রোমান ক্যাথলিকগণ তাহাদিগের উপর ভীষণ অত্যাচার করিত। ধৰ্ম্মগুরু পোপের অধীনতা স্বীকার করিত না বলিয়া এই প্রকার অত্যাচার। অত্যাচারের পরিমাণ একটা উদাহরণেই প্রকাশ পাইবে । পোপ-নিযুক্ত কোন কৰ্ম্মচারী এক প্রটেষ্টাণ্টকে পোপের অধীনতা স্বীকার করিতে বারম্বার অনুরোধ করিলেও যখন সে কিছুতেই তাহ স্বীকার করিল না, তখন, বলিতে শরীর শিহরিয়া উঠে, মনুষ্য-হৃদয় মনুষ্য হৃদয়ের পাষাণভাব দেখিয়া স্তম্ভিত হইয়া পড়ে, সেই অসহায় ১৩৫ প্রটেষ্টাণ্টের চক্ষু অল্পে অল্পে অস্ত্রবিদ্ধ করা হইতে লাগিল । কিন্তু ধৰ্ম্মের বল এমন অসাধারণ বল যে এমন পাশব অত্যtচারেও প্রটেষ্টাণ্ট কিছুতেই পোপের অধীনতা স্বীকার করিল না । সেই প্রটেষ্টাণ্ট অজ্ঞানের মধ্যে বাস করিয়াও এক ধৰ্ম্মবিশ্বাসের বলে দেবহৃদয় মনুষ্যবিশেষকে অনুসরণ করিয়া কি আশ্চর্য্য বীরত্বই প্রদর্শন করিল , আর ং মরা সত্যস্বরূপ, মঙ্গল স্বরূপ, প্রমময়, করুণাময়, জীবন্ত জাগ্রত দেবতা পরমেশ্বরকে অামাদিগের অতি নিকটস্থ একমাত্র পরম আশ্রয় জানিয়াও তাহার ধৰ্ম্মের জন্য আত্ম-বিসর্জন করিতে কুষ্ঠিত হইব, নানা প্রকার ভয়ে অস্থির হইব ? যাহার ভয়ে মৃত্যু সঞ্চরণ করিতেছে তিনি স্বয়ং যখন আমাদের হৃদয়দেবতা, প্রাণের একমাত্র অবলম্বন, তখন আমাদের আর কিসের ভয় ? অভয়ের আশ্রয়ে থাকিয়া হৃদয়কে ভয়জর্জরিত করিতে কি আমাদিগের লজ্জা হয় না, ঘৃণা হয় না ? তাহাকে ছাড়িয়া আমরা থাকিতে চাহি না—র্তাহাকে ছাড়িয়া থাকাই অামাদিগের মৃত্যু, তাহাই আমাদিগের নরক ; আর তাহাকে হৃদয়ে ধরিয়া রাখিলে আমাদিগের সমুদয় ভয় দূর হইয়া যাইবে। প্রটেষ্টাণ্টগণ রোমান ক্যাথলিকদিগের । “যশ্চায়মস্মিন্নাকাশে তেজোময়োইমৃতময়ঃ পুরুষঃ সৰ্ব্বানুভূঃ ! যশ্চায়মস্মিন্নাত্মনি তেজোময়োহুমূতময়ঃ পুরুষঃ সৰ্ব্বানুভূঃ । তমেব বিদিত্বাহুতিমৃত্যুমেতি নান্তঃ পন্থ বিদ্যতেইয়নায় ।” এই অসীম আকাশে যে অমৃতময় জ্যোতিৰ্ম্ময় পুরুষ, যিনি সকলি জানিতেছেন, এই আত্মাতে যে অমৃতময় তেজোময় পুরুষ, যিনি সকলি জানিতেছেন ; সাধক কেবল র্তাহাকেই জানিয়া মৃত্যুকে অতিক্রম করেন,—তদ্ভিন্ন মুক্তি প্রাপ্তির আর অন্য পথ নাই।