পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృ8 i তত্ত্ববোধিনী পত্রিক TM ዋW » ♥†ማ জীবনেও ইহা বেশ বুঝিতে পারি। একটা প্রকৃত দরিদ্রকে একটা মাত্র পয়সা দান করিয়া যে অতুল বিমল আনন্দ অনুভব করা যায়, নিজের বেশ-পারিপাটে সহস্ৰ মুদ্রা ব্যয় করিয়াও সে অতুলনীয় আনন্দ অনুভব করা যায় না। দরিদ্রের দুঃখ মোচনে কেমন যে একটু উচ্চ প্রকৃতির সুখ আছে তাহা অনুভব করা যায় কিন্তু বর্ণনা করা যায় না । সুখ দুঃখের মধ্যে এই যে গুণভেদ আছে ইহা দ্বারাই উচ্চ প্রকৃতির দুঃখ নীচ প্রকৃতির মুখাপেক্ষা শ্ৰেয়ঃ বোধ হয় । এই জন্যই বলিতেছি জ্ঞানজনিত অসুখও অজ্ঞানজনিত সুখ পেক্ষা শ্রেয়ঃ । এক্ষণে কথা হইতেছে সুখ অন্তরে না বাহিরে । মনে না শরীরে । একথা কেহই অস্বীকার করে না যে সুখ প্রধানতঃ মনে । কবি বলিয়াছেন ‘সুখ দুঃখ মনের খনিতে । হরিণ যেরূপ স্বীয় নাভিস্থিত কস্ত রীগন্ধে আমোদিত হইয়া সেই ভ্রাণের অনুসন্ধানে চতুর্দিক বিচরণ করে কিন্তু কোথায়ও পায় না মানবও সেইরূপ স্বীয় হৃদয়স্থিত সুখ বাহ সম্পদে অন্বেষণ করে ও পশ্চাৎ বিফল-মনোরথ হয়। পরন্তু সুখ দুঃখ শরীরের উপরেও নির্ভর করে । শরীর-বিজ্ঞান দ্বারা যখন এ পর্য্যন্ত প্রমাণ হইয়াছে যে শারীরিক বিঘটন দ্বারা মানসিক অবস্থার বিঘটন করা যায় তখন শরীরের সুখ দুঃখের উপর যে মনের সুখ দুঃখ সম্পূর্ণ নির্ভর করে এ কথা কে অস্বীকার করিবে । এক্ষণে সুখের উপাদান কি কি তাহাই দেখিতে হইতেছে। সুখের প্রধান উপায় স্বাস্থ্য । শরীর ভাল না থাকিলে ইন্দ্রের অমরাপুরী ও আমাদিগকে সুখ দিতে সমর্থ নয় । স্বাস্থ্য সুখই প্রধান সুখ । ইহার অভাবে সুখের অন্য কোন উপাদান আমাদিগকে সুখ দিতে পারে না । এই জন্য সকলেরই প্রথমতঃ স্বাস্থ্যোন্নতির চেষ্টা দেখা কর্তব্য। যে সমাজ বা যে ধৰ্ম্ম এই স্বাস্থ্যের ব্যাঘাতক সে সমাজ ও সে ধৰ্ম্ম মনুষ্যের কলঙ্ক স্বরূপ । নিজের স্বাস্থ্যই যে কেবল সুখের উপাদান তাহা নহে যাহাদিগকে লইয়া সংসার, যাহাদের মধ্যে সৰ্ব্বদা থাকিতে হইবে তাহাদের স্বাস্থ্যও আমাদের সুখের ' উপাদান । তাহীদের স্বাস্থ্য না থাকিলে আমাদের সুখের আশা কোথায়, কাজেই স্বীয় পরিবারের প্রতিবেশীর ও দেশের স্বাস্থ্য যাহাতে ভাল থাকে তাহার জন্য আমাদের একান্ত চেষ্টা কর্তব্য। সুখের তৃতীয় উপাদান প্রেম। এই প্রেম ত্ৰিবিধ ঈশ্বরপ্রেম, মাতাপিতার প্রতি প্রেম, ও আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধবের প্রতি প্রেম। যাহাতে এই প্রেমের পূর্ণ বিকাশ ও পরিণতি হয় তাহার জন্ম সকলেরই চেষ্টা কর্তব্য। ঈশ্বরে প্রগাঢ় ভক্তি না থাকিলে ঈশ্বর-প্রেম সম্ভবে না । প্রেমময় ঈশ্বরে অবিচলিত বিশ্বাস সুখের একটা মূল উপাদান । আমি আজি সুখের চরম সীমাতে আছি কে জানে কল্যই আমি অকুল দুঃখ-সাগরে না ভাসিব । প্রেমময় ঈশ্বরে বিশ্বাস না থাকিলে নির্ভয় মনে শান্ত হৃদয়ে সংসার-জ্বালা সহ্য করা यश न । সুখের আর এক উপাদান আত্মার অবিনশ্বরত্বে অবিচলিত বিশ্বাস । অামার আত্মা অনন্তকালব্যাপী এ বিশ্বাস যদি না থাকে, তবে সুখী হইব কি রূপে । অামার আত্মা যদি জলবুদ্ধ,দ জলে উদয় জল হ’য়ে সে মিশায় জলে’ তাহা হইলে সুখ হইবে কিরূপে । আমি ইহ জীবনে