পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գe তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা ३७ कन्न, १ छान অরুণ-সারথি আবিভূত হয়, অন্তর্জগতে তখন নিদ্রা ভাঙিয়া গিয়া ধ্যান আবিভূতি হয় ; বহির্জগতে যখন প্রভাত অস্তমিত হইয়া মধ্যাহ্ন দিব৷ আবিভূত হয়, অন্তর্জগতে তখন ধ্যান ভাঙিয়া গিয়া কৰ্ম্ম চেষ্টা আবিভূতি হয় ; এইরূপে নিদ্রা চিন্তা এবং চেষ্টা বৃত্তের ন্যায় একে একে আবৰ্ত্তিত হয় ; আর, বৃত্তের ন্যায় আবর্তিত হয় বলিয়াই উহার প্রধানতঃ বৃত্তি শব্দের বাচ্য ; মনের অন্যান্য বৃত্তি ঐ তিনটি মূলবৃত্তিরই শাখা পল্লব ; যেমন, কল্পনা স্মৃতি যুক্তি চিন্তার শাখা-পল্লব ; প্রযত্ন উদাম অধ্যবসায় চেষ্টার শাখা-পল্লব ; আলস্য অবসাদ বিলাস নিদ্রার শাখা-পল্লব ! সংসার কেবল এই সকল ক্ষণস্থায়ী মনোবৃত্তির অন্ন যোগাইতেই পটু ; চিরস্থায়ী আত্মার অন্ন যোগানো সংসারের সাধাtতীত। যাহাই হউক্‌, মনোবৃত্তি সকল আত্মার নিকটতম ভূত্য—তাহাদিগকে বশে আনয়ন করিয়া উপযুক্তরূপে পরিচালনা করিতে না পারিলে, আত্মা যেকার্য্যের জন্য পৃথিবীতে আসিয়াছে তাহার কিছুই সে ভাল করিয়া সমাধা করিতে পারে না। পরমাত্মার নিভৃততম সত্য স্থনদর মঙ্গল-রাজ্যই আত্মার চরম গম্য-স্থান ; কিন্তু নীচেকার তিনটি সোপান-পংক্তি উল্লঙ্ঘন করিয়া সেখানে পৌছানো অতীব সুদুষ্কর; তিনটি সোপান-পংক্তি কি ? না শরীর-পোষণ, সংসার-নির্বাহ এবং মনোবৃত্তি-সকলের যথোপযুক্ত পরিচালনা । ভগবদগীতা তাই সাধককে এইরূপ উপদেশ দিতেছেন “যুক্তাহারবিহারস্য যুক্তচেষ্টদ্য কৰ্ম্মসু । যুক্তস্বপ্নাববোধস্য যোগে ভবতি দুঃখহা ॥ যুক্ত যাহার আহার-বিহার, যুক্ত র্যাহার কৰ্ম্ম-চেষ্টা, যুক্ত র্যাহার নিদ্রাজাগরণ, ছুঃখবিনাশক যোগ র্তাহারই কেবল হয় ; অর্থাৎ যদি সকল দুঃখের মহৌষধি স্বরূপ যোগে সিদ্ধি লাভ করিতে ইচ্ছা কর, তবে যুক্তরূপে আহার বিহার করিবে, যুক্তরূপে কৰ্ম্মচেষ্টা করিবে, যথা সময়ে নিদ্রা যাইবে এবং যথা সময়ে জাগরণ করিবে । শরীর মন এবং সংসার তিনেরই মঙ্গল একটি-মাত্র বিষয়ের উপরে নির্ভর করে ; সেটি এই যে, মনোবৃত্তি-সকলকে স্থনিয়মে নিয়মিত করা | সংসারের কীট হইয়া র্যাহারা সংসারে লিপ্ত থাকেন, মনোবৃত্তি সকলকে যথানিয়মে নিয়মিত করা তাহাদের কার্য্য নহে। র্তাহীদের মধ্যে বিশেষ বিশেষ ব্যক্তির বিশেষ বিশেষ মনোবৃত্তি যে পরিমাণে চরিতার্থতা লাভ করে, সেই পরিমাণে সেই সেই ব্যক্তির অন্যান্য মনোবৃত্তি অন্নাভাবে শুকাইয়া যাইতে থাকে। বাণিজ্য-ব্যবসায়ের পদে সৰ্ব্বান্তঃকরণ বিক্রয় করিয়া বাহারা স্বর্ণ রজত ভিন্ন আর কোনো কিছুরই আস্বাদ জানেন না এবং ক্রেতা বিক্রেতা ভিন্ন আর কাহাকেও চেনেন না, তাহাদের যে কিরূপ শোচনীয় কাষ্ঠ দশা, তাহা সকলেরই জানা আছে । গীতবাদ্যের পদে সৰ্ব্বস্ব বিক্রয় করিলে লোকে যে অন্যান্য বিষয়ে কিরূপে অকৰ্ম্মণ্য হইয়া যায়, নগর পল্লীতে তাহারও দৃষ্টান্তের অভাব নাই। ংসারের অভ্যন্তরস্থিত সকল বিষয়েরই সম্বন্ধে এইরূপ বলা যাইতে পারে যে, তাহার কোনটিরই সমগ্র অনুশীলনে সমগ্র আত্মা চরিতার্থ হইতে পারে না ; চরিতার্থ হইবার মধ্যে কেবল মনের বিশেষ বিশেষ শাখা বৃত্তিই চরিতার্থ হয়। বাণিজ্য ব্যবসায়ের অনুশীলনে ধনাকাঙক্ষণ চরিতার্থ হয়, যুদ্ধ-ব্যবসায়ের অনুশীলনে