পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (ত্রয়োদশ কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧8 তত্ত্ববোধিনী পত্রিক ১৩ কল্প, ১ ভাগ Tomo-o-o: করিবে না। মনুর ন্যায় সমাজতত্ত্বদশী বোধ হয় অদ্যাপি কেহ জন্মে নাই । তিনি সমাজের অন্তস্তলে প্রবেশ করিয়া দেখিয়াছিলেন লোকের ঐহিক ও পারত্রিক যা কিছু মঙ্গল স্ত্রীলোকই তাহার মূল। গৃহীর এই বিরাট সমৃদ্ধি যাহার অধীন তাহাকে সম্যক্ সংযত করা চাই । তাই তিনি কহিলেন অতি সামান্য প্রসঙ্গ হইতেও স্ত্রীকে বিশেষরূপে রক্ষা করিবে । স্ত্রী অরক্ষিত হইলে পিতৃ ও ভর্তু উভয়কুলেরই শোকের কারণ হয়। অতএব ভর্তৃগণ যতই দুর্বল হউক না স্ত্রীরক্ষা একটী পরম ধৰ্ম্ম জানিয়া তদ্বিষয়ে একান্ত যত্ন করিবে । এখন বোধ হয় পূর্বোক্ত সামান্য প্রসঙ্গ অর্থে কি উদ্দিষ্ট তাহ বুঝিতে কাহারও বাকি নাই। পরেই তিনি আরও স্পষ্ট কথায় কহিতেছেন, যিনি যত্ন পূর্বক ভাৰ্য্যাকে রক্ষা করেন তিনি স্বীয় সন্ততি, শিষ্টাচার, অন্বয়, স্বধৰ্ম্ম ও আপনাকে রক্ষা করেন । মনু স্ত্রীকে স্বাধীন করিতে কেন নিসেধ করিলেন এই স্থানে তাহার বিশেষ কারণ দর্শাইতেছেন । র্তাহার ঐ কথ। গুলি বোধস্থলভ হইবার জন্য একটু ব্যাখ্যা আবশ্যক। প্রথমত, অসঙ্কর বিশুদ্ধ সন্তান জন্মিলে আপনার সন্ততি রক্ষা হয় । মনু যে বর্ণ ও বর্ণধৰ্ম্ম নির্দেশ করিয়াছেন তাহার মূল উদেশ্য সামাজিক উন্নতি । এই সন্ততিরক্ষার নিয়মে পুরুষপরম্পরাগত সৎ গুণ সকল রক্ষিত হইয়া সেই মহান উদেশ্যই সিদ্ধ হয় । অতএব যিনি বংশের ও সমাজের শ্ৰীবৃদ্ধি কামনা করেন তিনি এই সর্বোচ্ছেদকর ভীষণ সাঙ্কর্য্য হইতে সাবধান হইবেন । আমাদের এই বিশাল জাতিরূপ মহাবৃক্ষের মূল অতীতের যে কত গভীর গর্ভে প্রসারিত, পৃথিবীতে এই - ----som a mo- - আদিম জাতির উচ্ছেদ না হইয়া আজিও যে প্রবাহ চলিতেছে তাহার নিদান এই অন্বয় বা পিতৃপিতামহের বংশরক্ষা। দূরদশী মনু স্ত্রীস্বাধীনতা লোপ করিয়া সেই অন্বয় রক্ষা করিয়া গিয়াছেন । দ্বিতীয়ত, পুত্রের নিকট পিতার ঔদ্ধদেহিক যদি কিছু প্রাপ্য থাকে তাহা বিশুদ্ধ সন্তানেই সম্ভবে ; এই জন্য কহিয়াছেন যিনি আপনাকে রক্ষা করিতে চান তিনি স্ত্রীকে রক্ষা করিবেন । তৃতীয়ত, দোষম্পূষ্ট। স্ত্রীসত্তে ভৰ্ত্তার আধানাদি ধৰ্ম্মে আদৌ অধিকার থাকে না । সুতরাং স্ত্রীকে রক্ষা করিলে স্বধৰ্ম্মই রক্ষিত হয় । তার স্ত্রীরক্ষা মার পর নাই সভ্যতা এই জন্য তদ্বারা শিষ্টাচারই রক্ষা পায় । এখন বুঝা গেল স্ত্রীর স্বাধীনতা থাকিলে ধৰ্ম্মলোপে পরকাল এবং বংশলোপে ইহকাল উভয়েরই ক্ষতি । তাই ধৰ্ম্মপ্রাণ মনু আর থাকিতে পারিলেন না । তিনি বজ্রনাদে বলিয়া উঠিলেন ‘ন স্ত্রী স্বাতন্ত্র্যমৰ্হতি’ । পরে তিনি নিজের যুক্তি আরও বিশদ করিবার নিমিত্ত বিজ্ঞানের আশ্রয় লইয়া ছেন । লোকের মনে এমনও আশঙ্ক। হইতে পারে যে, উৎপত্তিকল্পে ক্ষেত্রই প্রধান, বীজ অপ্রধান, তবে সন্ততিলোপ কেন হইবে । এই ভ্রান্তি দূর করিবার জন্য কহিলেন, পতি শুক্ররূপে ভাৰ্য্যাতে প্রবেশ পূর্বক গৰ্ভভূত হইয়া ভূমিষ্ঠ হয়। জায়ার এইই জায়াত্ব যেহেতু পতি পুনরায় তাহাতে জন্মগ্রহণ করেন। স্ত্রী যেরূপ পুরুষকে ভজনা করে তাহার পুত্র ঠিক তদনুরূপ হয় । * অতএব প্রজাবিশুদ্ধির নিমিত্ত যত্ন সহকারে স্ত্রীকে রক্ষা করিবে । • বীজ বিচারস্থলে কথিত হইয়াছে উৎপত্তি রূপবর্ণ প্রভৃতি বীজগত চিহ্লেরই সহিত হইয়া থাকে। মনে কর, গ্রীষ্ম বর্ষাদি কালে ফালকৃষ্ট ক্ষেত্রে যে জা N