পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (দশম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৮ দেশে যত প্রকার ধৰ্ম্মমত প্রচারিত হইয়াছে, তাহার মধ্যে কেবল আত্মারই সজীবতা আস্তুরই জাগ্রত জীবস্তুs এন্ধ-দর্শন-লালসা মুদ্রিত রহিয়াছে। আত্মা যেমন চির কালই ব্রহ্মদর্শনের জন্য লীলায়িত, ঈশ্বর ও তেমনি আত্মাতে | প্রকাশিত হইবার নিমিত্ত চির দিনই সমুৎস্থক । রহিয়াছেন। পাছে জীবাত্মা পথভ্রষ্ট হইয়া উহা হইতে দূরে নিপতিত হয়, পাছে সে অপাত্রে শ্রদ্ধা ভক্তি প্রীতি অপর্ণ করিয়া বিভ্রান্ত হুইয়া পড়ে, পাছে সে ঈশ্বরবোধে অন্য কোন পদার্থকে আপনার দর্শনীয়, সেবনীয় বা পরম সম্ভজনীয় জানিয়া মৃগের ন্যায় জলভ্রমে মরীচিকায় নিপতিত হইয়া প্রকৃত লক্ষাভ্রষ্ট হয়, এই জন্য তিনি প্রত্যেক আত্মাতে স্বীয় নিষ্কলঙ্ক মহান মঙ্গল স্বরূপ দুরপনেয় অক্ষরে মুদ্রিত করিয়া রাখিয়াছেন। ঈশ্বরের সেই অনুপম দয়াগুণেই কোন দেশে কোন কালুে কোন মনুষ্যসমাজই ব্রহ্ম-দৰ্শন বিষয়ে নিশ্চেষ্ট থাকিতে পারে না । এই কারণেই মনুয্য আপনার ক্ষীণ বিদ্যা বুদ্ধির সিদ্ধান্তে,কল্পনাকুচুকে কদাচ চিরবদ্ধ হইয়া থাকিতে সমর্থ হয় না এবং অন্যের প্রদর্শিত কুটিল বক্সে পূদ বিপেক্ষ করিতে সহসা সাহসী হয় না। যখনই সে ব্রহ্ম-দৰ্শন-লালসায় আকুল হইয়া চন্দ্র সূর্য্য, বিদ্যুৎ বজ্রকে ঈশ্বরবোধে দর্শন করিতে যায়, অমনি যেন তাহার অন্তর মইতে কে বলিয় উঠে যে, এই নিজীব জড় পদার্থ তোমার উপাস্য নহে, অমনি আত্ম। কুণ্ঠিত হইয়া পথান্তর অবলম্বন করে। আবার হৃদয়ের উত্তেজনায় যখন সে কোন মহাদোর্দণ্ডপ্রতাপ বীর যোদ্ধাকে অথবা দয়াধৰ্ম্মশীল সুধীর সাধুকে ঈশ্বরবোধে পূজাৰ্চনা করিতে যায়, অমনি আত্মার অভ্যস্তর হইতে কে যেন ‘নেতি নেতি” এই তত্ত্ববোধিনী পত্রিক। | | | ১• কল্প, ১ ভাগ উপদেশ প্রদান করে যে “ইহা নহে ইহা নছে” অমনি আত্ম সঙ্কচিত হইয়া উঠে। আবার যখন আত্ম-নিহিত ঐশ্বরিক ভাবকে আদর্শ করিয়া মনুষ্য কোন প্রতিমানিৰ্ম্মাণে প্রবৃত্ত হয়, অমনি যেন কে হৃদয়-কদর হইতে বলিয়া উঠে যে, নৈনমূৰ্দ্ধং ন তির্যাঞ্চং ন মধ্যে পরিজগ্রভং। ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদযশ: হে মানব ! কি করিতেছ ? অধ উৰ্দ্ধ, তিৰ্য্যক মধ্য, কোন দেশে কেহ কখন র্যাহাকে দর্শন করে নাই, সেই মহদ্যশ অনন্ত অপ্রতিম ঈশ্বরের তুমি আবার কি প্রতিমা নিৰ্ম্মাণ করিবে ? অমনি আত্মা ক্ষুব্ধ হইয়া তাঙ্ক হইতে নিবৃত্ত হয় । আপনাকে দীন হীন দুর্বল বিবেচনা করিয়া, মনুষ্য যখনই কোন অসামান্য বিদ্যা-বুদ্ধি-সদগণ-সম্পন্ন লোককে আশ্রয় করিয়া ঈশ্বরের নিকটে যাইতে — র্তাহাকে সন্দর্শন করিতে ধাবিত হয়, তৎক্ষণাৎ যেন আত্মার অভ্যন্তরে এই মহাবাক্যের গম্ভীর প্রতিধ্বনি হইতে থাকে যে, শ্রোত্রস্য শ্রোত্ৰং মনসে মনোযদ্বাচোহবাচম, স উ প্রাণস্য প্রাণশক্ষুষ: চক্ষুঃ ” ঘিনি তোমার শ্রোত্রের শ্রোত্র, মনের মন, বাক্যের বাক্য, প্রাণের প্রাণ, চক্ষুর চক্ষু হইয়। তোমার অভ্যন্তরে বিরাজ করিতেছেন তাহাকে দেখিবার জন্য কাহার হস্ত ধারণ করিতেছ, কাহার আশ্রয় গ্রহণ করিতে যাইতেছ ? তখনই আত্মার সেই মোহ-নিদ্রা ভঙ্গ হয়, নিমীলিত চক্ষু উল্মীলিত হয়, তখনই তাহার অন্তদৃষ্টি উজ্জ্বল হইয়া উঠে । অমনি আপনার অন্ধতা, ঈশ্বরের প্রসন্নত প্রত্যক্ষ উপলব্ধি করিয়া কাতর স্বরে প্রার্থনা করিতে থাকে, “ আবিরাবীপ এfধ * “ হে স্বপ্রকাশ ! আত্মার অন্তরাল হইতে যে তোমারই মধুময় বাক্য শুনিতেছি, আর কতকাল লুকায়িত থাকিবে, তুমি প্রকাশিত হও ”