পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 বড়ই যন্ত্রণ ভোগ করেন। আধুনিক বিদ্যালয়-সমূহের হৃদয়বহিভূত শিক্ষাপদ্ধতি লালকদিগের পক্ষে ভাল নহে । তাহাতে বালকদিগের একটি মহৎ রোগ জন্মে । কি ? না অগ্নিমন্দ্যি । বালকদিগের জঠরাগ্নি কেবল নহে, সকল প্রকার তাগ্নিই ক্রমে ক্রমে মন্দীভূত হইয়া যায় । আহার বিষয়ে কেবল নহে, সকল বিষয়েই মন্দাগ্নি হয় । স্বদেশের প্রতি একটা মন্দাগ্নি বল, অরুচি বল, বিতৃষ্ণ বল তাহা ত যৎপরোনাস্তিই হয় । জ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে বালকগণের হৃদয়ে যাহাতে ভাবের স্ফর্তি হয়, সে প্রকার শিক্ষাদান এক্ষণে নাই বলিলেও হয়। প্রাচীন ব্যক্তিদিগের মুখে শুনা যায় যে,হেয়ার সাহেব ডিরোজিও সাহেব এইরূপ দুই এক জন মহাত্ম। দেশের বালকদিগকে কেবল জ্ঞান । শিক্ষা দিয়াই ক্ষান্ত থাকিতেন না, তাহারদের হৃদয়ে ভাবের সঞ্চার করিয়! দিতেন, মনুষ্যত্বের সঞ্চার করিয়া দিতেন । তাহার ফল এই দেখিতে পাওয়া যায় যে, তাহারদের সময়ের ছাত্রগণের মধ্যে অনেকেই দেশানুরাগী সভ্য ভব্য, ভাবজ্ঞ রসজ্ঞ, লোকহিতৈষী পরিণামদশী, এক কথায় এই যে, মানুষের মত মানুষ । যেমন ভালবাসার পাঠশালা গুহ, জ্ঞানের পাঠশালা বিদ্যালয়, তেমনি কার্য্যের পাঠশাল দেশ। বিদ্যালয়-গৃহ এবং দেশ এ দুয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিতি করে । স্নতরাং বিদ্যার যিনি গুরু তিনি গৃহের মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী পিতা এবং দেশের মঙ্গলাকাঞ্চক্ষী রাজা, উভয়ের প্রতিনিধি-স্বরূপ হইয়া ছাত্রগণকে স্বশিক্ষা প্রদান করেন ইহাই তাহার কর্তব্য । এইটি তাছার সর্বদা মনে রাখা উচিত যে, জ্ঞান-শিক্ষা যেমন আবশ্বক তাহার সঙ্গে সঙ্গে ভাব-শিক্ষা এবং কার্য্যশিক্ষাও তেমনি আবশ্ব্যক। ভাব এবং কাৰ্য্যকে জ্ঞান হইতে বিযুক্ত করিয়, যদি জ্ঞানশিক্ষা তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা \-ר

  • कब्र, ७ छाँ*

দেওয়া হয়, তাহা হইলে কেবল ঔদাসীন্যই শিক্ষা দেওয়া হয় আর কিছুই নহে! যে জ্ঞান ভাবের সহিত এবং কার্য্যের সহিত কোন সম্পর্ক রাখে না, সে জ্ঞান উদাসীন বই আর কি ? কাহারে যদি ক্রয় বিক্রয় করিতে, ৰ৷ কোন প্রকার হিসাব রাখিতে না হয়, তবে “একে একে দুই হয় ” এ কথা সত্য হইলেই ব৷ কি আর না হইলেই বা কি ? যদি স্বদেশকে বিশেষরূপে এবং মুখ্যরূপে ভাল বাসিবার কোন অামারদের প্রয়োজন না থাকে, তবে আর্য্যভট্ট কালিদাস প্রভৃতি আমারদের দেশে জন্মিায়াছিলেন একথা সত্য হইলেই বা কি অীর না হইলেই বা কি ? যে জ্ঞান, ভাব এবং কার্য্য দুয়ের বহির তাহার না আছে বাড়ি ঘর, না আছে আত্মপর, না আছে দেশ-বিদেশ । এক্ষণকার বিদ্যালয়ের যেরূপ শিক্ষা প্রণালী তাহা ঘর ছাড়া এবং দেশ ছাড়া, কথায় এই যে স্বষ্টি-ছাড়া, এরূপ শিক্ষার বশতাপন্ন হইয়াও র্যাহার। লক্ষীছাড়া ন! হ’ন তাহারাই ভাগ্যবান। সে শিক্ষা না জানি কেমন, যাহার যুক্তি এইরূপ যে, আমারদের দেশও দেশ, অন্যের দেশও দেশ, সুতরাং আমারদের অপনারদের দেশকে বিশেষ দৃষ্টিতে দেখিবার কোন আবশ্বকত। নাই। এ যে কথা এ ত উদাসীনের কথা । এই প্রকার ঔদাস্যকে অনেকে ঔদার্য্য বলিয়। বিশ্বাস করেন । ঔদাস্য এবং ঔদার্য্য এদুয়ের মধ্যে আদ্যক্ষরদ্বয়ের মিল আছে, অস্ত্য বফলার মিল আছে, অক্ষরসংখ্যারও মিল আছে ইহা অামি মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করি,কিন্তু তাহা বলিয়া দুইকে যে অভেদ ভাবে দেখিব, এত উদার ভাব এবং সমদৰ্শিতা অামাতে এখনো জন্মে নাই । যে ব্যক্তি আপনার দেশকে বিশেষরূপে এবং মুখ্যরূপে ভাল বাসেন, তিনি যখন সেই ভালবাসা অন্যদেশে প্রসারণ করেন, তখন তাহাতে এক