পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (নবম কল্প তৃতীয় খণ্ড).pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

# 2/ ○ 8 statg ۵۹** দেশানুরাগের প্রকৃত পদ্ধতি কিৰূপه যে, বরং আমারদের শরীর হইতে আমারদের মস্তক বিচ্ছিন্ন হইবে তথাপি আমারদের হৃদয় হইতে সে সকল মহান সুন্দর এবং কল্যাণ আদর্শ এক তিলও অন্তর হইবে না, যখন আমারদের মনে আচারে ব্যবহারে কৰ্ম্মকাৰ্য্যে কথায় বার্তায় পৃথিবীর আদর্শভূত অপ্রতিম ভারতবর্ষ এবং তাহার মহান অমায়িক ভাব মাহাত্ম্য প্রতিবিম্বিত হইতে থাকিবে, তখনি জানিব যে আমরা যথার্থ দেশানুরাগী হইয়াছি । দেশের প্রতি যৎসামান্য অনুরাগ থাকিলেই যদি দেশানুরাগী হওয়া যাইত তাহা হইলে যাহার দেশের ভাষ! পৰ্য্যন্ত ইংরাজী করিতে ইচ্ছা করেন তাহারাও দেশানুরাগী! যাহার দেশের পরিপেম বস্ত্ৰ পৰ্য্যন্ত তুচক্ষে দেখিতে পারেন না তাছারাও দেশানুরাগী ! যদি যথার্থ দেশান্ত- | রাজ-প্রজা তেমনি আকাশ-পৃথিবী । দেশীয় রাগী হইতে চাও তবে গৃহের প্রতি তোমার যে একটি অকৃত্রিম স্নেহ মমত। অাছে তাহ। দেশে প্রসাপিত কর । গৃহের পিতার ন্যায় দেশের পিত। অাছে, গৃহের মাতার ন্যায় দেশের মাত আছে, গৃহের ভ্রাতার ন্যায় দেশীয় ভ্রাতা আছে। দেশের পিতা কে ? না দেশীয় রাজা অথবা রাজপুরুষগণের সমষ্টি । দেশের মাত কে ? না দেশীয় প্রজাবৰ্গ । সঃ ক্ষেপে প্রজ। বলিলাম, কিন্তু আমার বিশেম লক্ষ্য তাহারদের প্রতি মাহারা চাস বাস করিয়! জীবিক নিৰ্বাহ করে, ভূমির সহিত মহারদের সাক্ষাৎ সম্বন্ধ । মাতার দুগ্ধে শিশুস স্তানের জীবন রক্ষা হয়, প্রজার অন্নে দেশের জীবন রক্ষা হয়। পিতার কর্তৃত্বে গৃহের শান্তি রক্ষা গৌরব রক্ষা শ্ৰীবৃদ্ধি এবং উন্নতি সাধন হয় । রাজার কর্তৃত্বে দেশের শান্তি রক্ষ। গৌরব রক্ষা শ্ৰীবৃদ্ধি এবং উন্নতি সাধন হয়। শাস্ত্রে আছে যে, মাতা গুরুতরা ভূমেঃ থাৎ পিতোচ্চতরস্তথা। মাত পৃথিবী হইতেও গুরুতর, পিতা আকাশ হইতে ও উচ্চতর পৃথিবীর সহিত মাতার এই যে উপমা এবং আকাশের সহিত পিতার?এই যে উপমা, ইহা অতি সুন্দর। অন্নরূপ পৃথিবীর স্তনদুগ্ধে আমরা জীবন ধারণ করিতেছি । পৃথিবীর ক্রোড়ে আমরা লালিত পালিত হইতেছি । শিশুসন্তানের যেমন পিতা অপেক্ষাও মাতার সহিত নিকট সম্বন্ধ সেইরূপ আকাশ এবং তাহার চন্দ্র সূৰ্য্য অপেক্ষাও পৃথিবীর সহিত আমারদের নিকট সম্বন্ধ । পুনশ্চ পিতামাতার মনশ্চক্ষু যেমন সন্তান গণের মঙ্গলের প্রতি দিনরাত্রি পড়িয়া আছে সেইরূপ আকাশের চন্দ্ৰ-সূৰ্য্য-তারক-চক্ষু পৃথিবীর গর্ভজাত জীবগণের মঙ্গলের প্রতি দিন রাত্রি পড়িয়া আছে । আকাশ যেমন সর্বদিকব্যাপী পিতার মঙ্গল ভাব তেমনি সৰ্ব্বদিকৃদশী । যেমন পিতামাত তেমনি ভ্রাতা কে ? না দেশের মধ্যে র্যাহার। র্যাহার দের স্বশ্রেণীর লোক তাহারাই তাহীদের দেশীয় ভ্রাতা । যেমন দেশের এক জন রাজপুরুষ আর এক জন রাজপুরুষকে ভ্রাত বলিয়। সম্বোধন করিতে পারেন । একজন প্রজ। আর এক জন প্রজাকে ভ্রাতা বলিয়। সম্বোধন করিতে পারেন । এইরূপে গৃহের ভাব দেশে যতই প্রসারিত হয়, ততই দেশের প্রতি অনুরাগের সঞ্চার হয় । যেমন গুহের প্রতি এবং দেশের প্রতি তেমনি শিক্ষাস্থানের প্রতিও মনুষ্যের স্বভাবত একটি ভাল বাস জন্মে। চরাচর পৃথিবী সমস্তই মনুষ্যের শিক্ষা স্থান। গৃহে বালকের কি শিখে ? না ভালবাস। তাহার পর জ্ঞান শিক্ষা আবশ্বক, পাঠশালা সেই জ্ঞানশিক্ষার স্থান। পাঠশালায় গুরু পিতামাতার গুরু ভার আপন হস্তে গ্রহণ করেন । ঘরে র্যাহারা ভালবাসার শীতল ছায়াতে লালিত পালিত হন, বিদ্যালয়ে তাহারা প্রখর বুদ্ধির উত্তাপে