পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড).pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা মারদিগকে পরিত্যাগ করিবেক, তখন তুমি একাকী নিকটে থাকিয়া চিরজীবন-সখী চির-সুহৃদ বলিয়। অামারদিগকে আশ্রয় দিবে । তোমার ন্যায় সুহৃদ অণর কোথায় পাইব ? সংসার কেবল যন্ত্রণরই আধার, ইহার সুখ কেবল দুঃখের কারণ । অতএব হে জীবনের জীবন ? অামারদিগকে সংসার-পাশ হইতে মুক্ত কর, এবং আমারদের সমুদয় প্রীতি তোমাতে স্থাপিত কর । তোমার নাম এত্যেক পরিবারে কীৰ্ত্তিত হউক ; সৰ্ব্বত্র তোমার মহিমা মঙ্গীয়ান । হউক । হৃদয়-নাথ ! তুমিই ধন্য, তুমিই ૧ નોં, তুমিই ধন্য | ওঁ একমেবাদ্বিতীয়ং ” অনন্তয় ব্রহ্ম সঙ্গীত সহকারে ত্রহ্মো পাসনা আরম্ভ হইল এবং ব্যাখ্যান পাঠের পর বেদী হইতে আশ্চর্য্য আদেশ করে লেন যে, “প্রাতঃকালে সুৰ্য্যোদয় অবধি ব্রাহ্ম ধৰ্ম্ম আজি কি উজ্জল বেশ ধারণ করিয়াছেন স্বর্য যখন অদ্য প্রভাতে আপনার কিরণ | বিকীর্ণ করিলেন, তিনি ও অমরদের সঙ্গে সঙ্গে উথিত হইয়া অামারদিগকে র্তাহার নিকটে আকর্ষণ করিলেন । অদ্য প্রার্থনা করিবার পূৰ্ব্বেই তার উজ্জল কিরণ আ মারদের হৃদয়ে প্রতিভাত হইল । সম্বৎসর কাল অমর প্রতীক্ষা করিতেছিলাম, কবে ১১ মাঘ আসিবে, সকল ভ্রাতৃ মণ্ডলী একত্র হইয় প্রীতি-পুষ্প দ্বারা পরম পিতার অর্চনা করিব, সকল সুহৃদে মিলে পরম সখাকে ডাকিব,গ্ৰীতি ভক্তিতে আদি হইয়া তার চরণে প্ৰণিপাত করিব । সেই ১১ মাঘ উপস্থিত, অদ্য ঈশ্বর অামারদের নিকটে প্রকাশিত হইয়াছেন। যেমন আমরা জাগ্রত হইয়াছি, আমারদের চক্ষের মালোক হইয়া তিনি দর্শন দিয়াছেন। Տ Գ Ֆ সুর্য্য উদয় অবধি এ পর্য্যন্ত ক্রমাগত র্তাহার মহিমার মধ্যে আমরা বিচরণ করি - তেছি । আমরা জানিতেছি, অামারদের পরম গুরু পরম সখা আমারদের সম্মুখেই আছেন । তিনি আমারদের চিক্তকে অাকর্ষণ করিতেছেন, আমরাও সহজে র্তাহণকে সর্ববস্ব সমর্পণ করিতেছি। র্যার মুখ হইতে যে অমৃত বাক্য নিঃসন্দিত হইতেছে, তাই তিনিই প্রেরণ করিতেছেন। পূজার জন্য যিনি যাহা সংগ্ৰহ করিয়া পবিত্র-স্বৰূপকে উপহর দিতে ইচ্ছ। করিতেছেন, তিনিই তাহ ; দান করিতেছেন । ব্রাহ্মমণ্ডলীর মধ্যে উৎসাহ প্রভ স্ফূৰ্ত্তি পাইতেছে। সঙ্গীত স্বনিতে দিগ্বিদিক ধনিত হইতেছে—স্তব স্তোত্রে আকাশ পূর্ণ হইতেছে । সাগর সমান গম্ভীর ভাবে হৃদয় উচ্ছসিত হইতেছে, আমন্দ-কিরণ চন্দ্র-কিরণের ন্যায় প্রসারিত হইতেছে। ঈশ্বর আমারদের সম্মুখে পুর্ণ মহিমাতে বিরাজ করিতেছেন । র্তর সেই তিমিরাতীত জ্যোতিৰ্ম্ময় ৰূপ দর্শন করিয়া আমরা কৃতার্থ হইতেছি । তার সেই জ্যোতি এ চক্ষুতে দেখা যায় না, তীক্ষা জ্ঞান চক্ষু দ্বারা দেখিতেছি । ব্রাহ্মধৰ্ম্মের যেমন উপদেশ যে তাহাকে সহজে দেখ, আমরা তেমনি তঁহাকে সহজেই সাক্ষাৎ দেখিতেছি । যেমন সকলকে দেখিতেছি, উৎসাহ ও আনন্দের সহিত মিলিত হইতেছেন; তেমনি সাক্ষাৎ জানিতেছি, পরম পিত। অামারদের সম্মখে আসিয়াই আমারদের উপাসনা গ্রহণ করিতেছেন । যেমন সাক্ষাৎ জানিতেছি, এই ভ্রাতৃমণ্ডলী উল্লাসের সহিত র্তাহাকে প্রীতি দান করিতেছেন; তেমনি জানিতেছি, ঈশ্বর প্রতি হৃদয়ে অধিষ্ঠিত হইয়া সেই প্রীতি গ্রহণ করিতেছেন ৷ ‘ অপাণিপাদোজবনোসৃহীত।