পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (পঞ্চম কল্প দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড).pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তত্ত্ববোধিনী পত্রিক কি পুণ্য বল যে তাহার বিশুদ্ধ উজ্জল সন্নিধানের যোগ্য হইতে পারি। এ কেবল উiহারই করুণ, তাহারই করুণ । সমুদয় লোক ও সমুদয় জীবের প্রতি যাহার দৃষ্টি রছিয়াছে, আমাদের কি সৌভাগ্য ! তিনি অামাদিগকে ক্ষণকালের নিমিত্তেও বিস্মৃত মহেন । আমরা জানি আর না জানি, তাহার প্রীতি দৃষ্টি আমাদের প্রতি সৰ্ব্বদ রছিয়াছে । আমরা প্রার্থনা করি বা না করি, তিনি আমাদিগকে করুণ বিতরণে ক্ষান্ত নহেন । আমরা তাহার পিতৃভাব উপলব্ধি করি কি না করি, তিনি আমাদের পরম পিত ৰূ েবৰ্ত্তমান রহিয়াছেন । তাহার হস্ত আমাদের জন্য বিনিমুক্ত রহিয়াছে, তাহার মধুর আহবান শ্রবণ করিলে তিনি অামারদিগকে প্রীতির সহিত গ্রহণ করেন । ধনের জন্য লালায়িত হইয়া হয়ত তাহ। পাওয়া যায় না, খ্যাতি প্রতিপত্তির জন্য চির জীবন ঘূর্ণায়মান হইলে হয়ত তাহ হইতে বঞ্চিত হইতে হয় ; কিন্তু ঈশ্বরের এৰূপ করুণা যে সাধক মনের সঙ্কিত তাহাকে প্রার্থনা করিলেই তিনি সেই প্রার্থন। অচিরাৎ পূর্ণ করেন । কিন্তু আমরা কি বিমুঢ় কি ক্ষীণ মতি বিষয়ের মধুর স্বরেই আমর) প্রব- ! ঞ্চিত রহিয়াছি । সংসারই আমাদের সর্বস্ব, ঈশ্বর কিছুই নহেন। কতকগুলি চেতন-শূন্য জড়-রাশিই আমাদের নিকটে সত্য, জগতের প্রাণ ঈশ্বর সত্য নহেন । সুখই অামাদের সেব্য, প্রদাতা কৃতজ্ঞতার বিষয় নহেন। মৃত্যুর ভীষণ করাল মুৰ্ত্তি দেখিয়। যখন আমরা ভীত হই, তখন হয়ত ঈশ্বরকে স্মরণ করি, কিন্তু কৰ্ম্মের সময় তাহাকে ভুলিয়া থাকি; বিষয় কোলাহলের মধ্যে তাহাকে মনে স্থান দিই না । বিষাদ ও বিপদের সময় যখন আমারদিগকে সকলে পরিত্যাগ করে, তখনই হয়ত ঈশ্বরের নিকটে ক্রমদন করি ; কিন্তু সম্পদের সময়ে কেবল সম্পদকেই সেবা করিতে রত থাকি। ফুৰ্ব্বহ রোগে আক্রান্ত হইয়া হয়ত পৃথিবী লোককে ক্ষণ কালের নিমিত্ত পরিত্যাগ করি এবং অনন্ত কালের প্রতি একবার

  • ఫె

-o-o-o: চাহিয়া দেখি ; কিন্তু আবার যখন সুস্থত। পাই, ষখন সুখ-সমীরণ সেবন করি, তখন মৃত্যুকে একেবারে বিস্মৃত হইয়। যাই— ঈশ্বর হইতে দূরে থাকি, বিষয়ের সঙ্গেই জড়িত হই-ইহকালই সৰ্ব্বস্ব হয়, অনন্ত ভাবি কালের প্রতি লক্ষ্যই আইসে না । সংসারই আমাদিগের উপরে প্রভুত্ব প্ৰ কাশ করিড়েছে । আমরা কিসের জন্য খেদ করি ? বিষয়ের অভাব জন্য । কিসেতে স্ফীত হই ? সাংসারিক সম্পদে। কিসেতে মুহ্যমান হই ? বিষয় বিপদে ! কি বিষয় চিন্তা করি ? আপনার ক্ষুদ্র বিষয় লইয়াক্ট অধিক কাল চিন্তা করি । ইহাতে মনের স্বাস্থ্য, আত্মার স্বাস্থ্য কখনই হয় না। অামর। অল্প বিষয়ের জন্য সেই ভুমীকে পরি ত্যাগ করিতেছি । অমর। আমাদের অনন্ত কালের উপযুক্ততাকে বিনাশ করিতেছি। কিন্তু দুর দৃষ্টিতেই মনুষ্যের মনুষ্যত্ব হয়। শিশুর নিকটে বর্তমান কালই সৰ্ব্বস্ব। আপাতরম্য বিষয়ই তাহার নিকটে রমণীয়। বালক আপে আপে পরিণাম দুটি শিক্ষণ করিতে থাকে । সে শিক্ষকের প্রীতি লাভের প্রভাশায় পাঠাভ্যাসে কেমন মনোযোগী হয়—সমবয়স্কের সহিত ক্রীড়ার কালকে কেমন আগ্রহের সহিত প্রতীক্ষণ করে। বয়োবৃদ্ধি সহকারে এই দূর দৃষ্টি আরো অধিক হয়। কৃষক তাছার পরি. শ্রমের ভাবিফলের প্রতি কেমন ধৈর্যের সস্থিত লক্ষ্য করে---পিতা তীক্ষার পুত্ৰ সকলের ভাবি মঙ্গল উদেশে কি কষ্ট পূৰ্ব্বক অর্থ সঞ্চয় করেন। জ্ঞান আর অজ্ঞান, শিশুকাল আর যৌবন কাল— ইহার মধ্যে বিশেষ ভিন্নত কিসে হয় ? না দূর দৃষ্টিতে । আমরা কেবল বর্তমানেরই জীব নছি, কিন্তু ভাবি কালের জন্য প্রস্তু হওয়াই আমাদের কৰ্ত্তব্য । এই পৃথিবী লোকের জন্যও যদি এই নিয়ম হয়, তবে অনন্ত ভাবি কালের প্রতি আমরা কেন না। দৃষ্টি করি—বিষয়ের আবরণ ভেদ করিয়া কেন না আমরা সত্যের প্রতি লক্ষ্য করি—— মৃত্যুর পরপরে কেন না দুটি পাত করি। অামারদের অনন্ত কালের সম্বল কেবল