পাতা:তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (সপ্তম কল্প প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8b" সম্পদ বুদ্ধি বিধাতা”—তিনি অামারদের প্রচ্যেকেরই পাপ-ত্ৰাতা ও মুক্তি-দাতা । তিনি যেমন “ চন্দ্র সুৰ্য্যে থাকিয়া চন্দ্র সুর্য্যকে নিয়মিত করিতেছেন " তিনি যেমন জগতের প্রাণ-ৰূপে বর্তমান থাকিয় জগৎকে শোভ সৌন্দর্যে জীবন সুখে পূর্ণ করিতেছেন - তত্ত্ববোধিনী পত্রিক } সকল অধিকারের মধ্যে এই তো আমারদিগের প্রধান অধিকার, যে গৃহেতে থাকিয়া পরিবারে পরিবৃত হইয়া সেই অনন্ত দেবকে অন্তরে সন্দর্শন করিতে পারি। সকল করুণার মধ্যে এই তো সেই করুণাময়ের প্রধান করুণ, যে তিনি গৃহেতে তেমনি তিনি প্রতিনিয়তই প্রতি গৃহের গৃহ- ! আত্মাতে আসিয়া অামারদিগকে দর্শন পতি প্রতি পরিবারের পিতামাতা উপাস্য দেবত হইয়া সকলকে রক্ষণ ও পালন করিতেছেন । তিনি মুক্ত হস্তে প্রতিক্ষণে শান্তি সমৃদ্ধি, সুখ সৌভাগ্য, জ্ঞান ধৰ্ম্ম বিধান করিয়া প্রতি আত্মাকেই উন্নত করিতেছেন । সম্বৎসর কাল যাহার ক্রস্ত হইতে অন্ন-পান লাভ করিয়া শরীর রক্ষিত হইয়াছে, যার প্রীতিসুধ পান করিয়া আত্মা পরিপালিত ও পরিপুষ্ট হইয়াছে; আমরা সকলে স্টারই বার্ষিক মহাপূজার জন্য পিতা পুত্রে, ভ্রাতা ভগিনীতে, আত্মীয় সুহৃদে, এখানে সম্মিলিত হইয়াছি। প্রীতি-উপহার লইয়া সকলে যোড় করে তারই সম্মুখে উপস্থিত হইয়াছি । আমরা মনুষ্য হইয়া, গঙ্গর শরণাগত পদানত সেবক হইয়া—ব্রাহ্ম হইয়। কি তাহাকে কেবল জগতের অধিপতি, ছুলোকের শ্বর কপে উপলব্ধি করিয়াই পরিতৃপ্ত হই৷ে পারি ? আমরা কি পশু-পক্ষীর ন্যায় অরণ্যে অরণ্যে, বাহিরে বাঙ্কিরে, তাহার যশো-গান করিয়া শান্তি লাভ করিতে পারি ? যিনি অামারদের প্রাণের প্রাণ, অন্তরের অন্তর, উাহাকে আত্মাতে নিরীক্ষণ করিতে ন! পারিলে—পিতা মাতার ন্যায় সেই অন্তরতম প্রিয়তমকে চক্ষুর সম্মুখে রাখিয়া প্রতি দিন পূজা করিতে না পারিলে কি আত্মার ভাস্তরিক-স্পৃহ চরিতার্থ হয় । আমরা গৃহস্থ হইয়া সেই গৃহ-দেবতার নিত্য আরাধনা মা করিলে কি কখনো গৃহ পরিবারের সুখ শান্তির সম্ভাবনা তাছে : - দেন, আমারদের আন্তরিক প্রীতি-পুজা গ্রহণ করেন । তিনি যেমন জগতের অধিপতি—জগতের রাজা হইয়া চন্দ্র সুর্য্য, নদ নদী সমুদ্র পৰ্ব্বত,পশু পক্ষী জীব জন্তু সকলকে সুনিয়মে রক্ষা করিতেছেন, তিনি যেমন “লোক ভঙ্গ নিরাকরণার্থে সেতু-স্বৰূপ হইয়। এ সকল ধারণ করিতেছেন; তেমনি তিনি প্রতি গৃহের গৃহ-পতি হইয়া প্রতি গৃহস্তকে সংসার-ধৰ্ম্ম পরিপালনে নিয়োগ করিতেছেন । তারই অনুশাসনে পিতা-মাতা জীবন ধন স্বৰ্বশ্ব পণ করিয়া পুত্র-কন্যা পালন | করিতেছেন, তারই অনুশাসনে পুত্র পিতার বশীভূত ও মাতার অনুগত হইয়া চলিতেছে, ভ্রাত ভ্রাতার সহিত এক-হৃদয় হইয়া প্রীতি সম্ভাবে জীবন কাল অতিবাহিত করিতেছে, পতিব্ৰতা সতী পতির আজ্ঞানুসারিণী হইয়। প্রীতি সম্ভাবে সংসার ধৰ্ম্ম রক্ষা করিতেছে, সমুদায় পরিবার, সমস্ত লোক, ঈশ্বরের প্রিয় কাৰ্য্য সাধনের জন্য আকুল ও অস্থির হইয়া রহিয়াছে । বাহ্য জগতের মধ্যে যেমন তাহার হস্ত না থাকিলে সকলই বিশৃঙ্খল হইয়া পড়িত; তেমনি পরিবারের মধ্যে প্তাহার সিংহাসন, হৃদয়ে তাহার ধৰ্ম্ম-সাশন না থাকিলে সকলই ছিন্ন ভিন্ন হুইয়া যাইত। অরাজক রাজ্যের ন্যায়, পিতৃহীন পরিবারের ন্যায় প্রতি গৃহে ভয়ামক দুঃখ দাবানল প্রজ্বলিত হইয়া এখানকার সুখ-শাস্তি সকলই ভস্মীভূত করিয়া দিত, সকল স্থান বিষাদের আলয় ৰূপে পরিণত হইত।