পাতা:তারাচরিত.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
তারাচরিত।

আমাকে প্রবঞ্চনা করিয়া পলায়ন করিলে তবে আর এই বিফল জীবন ধারণে আমার কি সুখ! উঃ আমি আর কাহার মুখ দেখিয়া নয়নকে চরিতার্থ করিব। আর কাহার বাকো আমার কর্ণ সুশীতল হইবে। নাথ রসনা আর কাহার সহিত কথা কহিয়া বাসনা পুরাইবে। আমার সুখ দুঃখের ভাগী আর কে হইবে। নাথ আর আমাকে সুধা বিনিন্দিত বচনে প্রেয়সী বলিয়া কে সম্বোধন করিবে! আমার নিকট প্রেমেতে গদগদ হইয়া আর কে উপবেশন করিবে! আমার এই চির তাপিত মন আর কে সুশীতল করিবে! তোমা বিনা যে চতুর্দ্দিক অন্ধকার দেখিতেছি। নাগ সেই বিদায় কি তুমি আমার নিকট হইতে জন্মের মতন গ্রহণ করিয়াছিলে। ইহজন্মে আর দেখা হইবে না বলিয়া কি আমার মন এত ব্যাকুল হইয়াছিল! এই বলিতে বলিতে সেই পতিপ্রাণা রমণীশিরোমণি চিতা প্রস্তুত করিতে আজ্ঞা দিলেন এবং মালতীকে লইতে পাঠাইলেন।

 এদিকে চিতা প্রজ্জ্বলিত হইয়া উঠিল। তখন তারা মালতীকে পিতৃরাজ্য দান করিয়া স্বীয় হৃদয়েশ্বরকে হৃদয়ে ধারণ করিলেন এবং সেই প্রজ্জ্বলিত চিতায় আরোহণ করিলেন। দেখিয়া সকলে হাহাকার করিয়া বলিতে লাগিল যে আজ সত্য সত্যই কি আমাদের সুখতারা চিরদিনের মত অস্তমিত হইল।

 যখন পৃথ্বীরাজ পরলোকগামী হন তখন তাহার বয়ঃক্রম তেইস বৎসর মাত্র হইয়াছিল। তাঁহা হইতে যে রাজপুতানার