পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
তিতাস একটি নদীর নাম

 এ শিল্পী যে ছবি আঁকে তা বড় মনোরম। তীর ঘেঁসিয়া সব ছোট ছোট গ্রাম। গ্রামের পর জমি। অগ্রহায়ণে পাকা ধানের মরসুম। আর মাঘে সর্ষেফুলের হাসি। তারপর আবার গ্রাম। লতাপাতা গাছগাছালির ছায়ায় ঢাকা সবুজ গ্রাম। ঘাটের পর ঘাট। সে ঘাটে সব জীবন্ত ছবি। মা তার নাদুসনুদুস শিশু ছেলেমেয়েকে চুবাইয়া তোলে। আর বৌ-ঝিয়েরা কলসী লইয়া ডুব দেয়। অল্প একটু দূর দিয়া নৌকা যায় একের পর এক।…


 তিতাস একটি নদীর নাম। এ নামের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ তার তীরের লোকেরা জানে না। জানিবার চেষ্টা কোনদিন করে নাই, প্রয়োজন বোধও করে নাই। নদীর কত ভাল নাম থাকে—মধুমতী, ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, সরস্বতী, যমুনা। আর এর নাম তিতাস। সে কথার মানে কোনোদিন অভিধানে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না। কিন্তু নদী এ-নামে যত প্রিয়, ভালো একটা নাম থাকিলে তত প্রিয় হইতই যে, তার প্রমাণ কোথায়!

 ভালো নাম আসলে কি? কয়েকটা আখরের সমষ্টি বৈত নয়। কাজললতা মেয়েটিকে বৈদুর্যমালিনী নাম দিলে, আর যাই হোক, এর খেলার সাথীরা খুশি হইবে না। তিতাসের সঙ্গে নিত্য যাদের দেখাশুনা, কোনো রাজার বিধান যদি এর নাম চম্পকবতী কি অলকনন্দা রাখিয়া দিয়া যায়, তারা ঘরোয়া আলাপে তাকে সেই নামে ডাকিবে না, ডাকিবে তিতাস নামে।