তৃণান্ধুর S SV) আমার রাগ ও দুঃখ দুইই হোল, নিশ্চয় যারা মেটে আলু তুলতে এসেছিল, তাদেরই এই কাজ ।। সজীব পুষ্পিত গাছ-কারণ এই সময় কেরোঝাকার ফুল হয়-কেটে ফেলা যে কতদূর হৃদয়হীন বর্বরতা, তা আমাদের দেশের লোকের বুঝতে অনেকদিন যাবে। সেবার অমনি যুগল কাকাদের বাড়ীর সামনের কদমগাছটা কালো বিক্ৰী করে ফেললে তিন টাকায়, জ্বালানি কাঠের জন্যে। এমন কি কেউ কোথাও শুনেচে ? কদমগাছ, যা গ্রামের একটা সম্পদ, যে পুম্পিত নীপ সকল বৈষ্ণব কবিকুলের আশ্রয় ও উপজীব্য-সামান্য তিনটে টাকার জন্যে সে গাছ কেউ বেচে ? শুধু আমাদের দেশেই এ ধরণের ঘটনা সম্ভব হয়, সুন্দরকে দেখবার চোখ থাকলে, ভালবাসবার প্রাণ থাকলে এ সব কি আর হোত ? কাল বিকেলে অল্পক্ষণের জন্য সোনালী রাঙা রোদ উঠাল-বেলেডাঙার পথে যেখানে একট। বাবলা গাছের মাথায় একটা বুনো চালকুমড়ো হয়ে আছে, ঐখানটাতে বসলুম-কতদিনের মেঘমেদুর আকাশের পরে আজ রোদ উঠেচে, এ যেন পরম প্ৰাথিত ধন ! এক জায়গায় সোদালি ফুল ফুটে থাকতে দেখলাম মাঠের মধ্যে। কাত্তিক মাসে সোদালি ফুল, কল্পনা করতেই পারা যায় না। কেলেকেঁাড়ার ফুলও «գ**ICՀ| 23 | কাল মেয়েরা চোদ্দ শাক তুললে, চােদ্দ পিদিম দিলে-খুকুদের বোধনতলায় বড় একটা প্ৰদীপ দিয়েছিল, বিলবিলের ধারে, উঠোনের শিউলি তলায় । বারাকপুরে চোদ্দ পিদিম দেওয়া দেখিনি কতকাল ! আজ বিকেলে খুকুদের কুঠার মাঠে বেড়াতে নিয়ে গেলাম। পুরোণো কুঠার হাউজ ঘরে ঘোর জঙ্গল হয়ে গিয়েচে-কত কি বনের লতা হয়ে আছে— খুকুর তা দেখে আনন্দ উৎসাহ দেখে কে ! একটা লতার মধ্যে কি ভাবে ঢুকে সে খানিকটা দুললে, মাঠে গিয়ে ছুটােছুটি করলে-আমায় কেবল চেচিয়ে বলে-- দাদা, এটা দেখুন, ওটা দেখুন। তারপর ফিরে এসে ছেলেদের নিয়ে গোপালনগরে গেলাম কালী পূজোর ঠাকুর দেখাতে । হাজারীর ওখানে অনেক রাত হয়ে গেল তাস খেলতে বসে-অনেক রাত্রে বাড়ী ফিরি। পরদিনও আবার কুঠার মাঠে যাওয়ার কথা ছিল-ওরা সবাই গেল, কিন্তু মনোরমার ভাহি কালো কুঠীর জঙ্গলে হাটুটা বেজায় কেটে ফেললে, তার
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৯
অবয়ব