তৃণান্ধুর SGd বুঝতে পারি। এরই জন্যে মনটা হাঁপাচ্চে। প্ৰকাণ্ড কোনো মাঠের ধারে বন, বনের প্রান্তে একটী বাংলো-কিংবা জঙ্গলে ঘেরা অভ্রের খনি, বালু-মিশ্রিত পাথুরে মাটীর গায়ে অভ্র কণা চিক্ চিক করাচে, নয় তো উচ্চাব্বাচ্চ পাহাড়ে জমি, যে দিকে চােখ যায় শুধুই বন—এই রকম স্থানেই যেতে চাই-থাকতে চাই। এতটুকু স্থান চায় না মন। চায় আরও অনেক বড় জায়গা-অনেকখানি বড়-অচেনা, অজানা, রুক্ষ, কৰ্কশ ভূমিত্রী হোলেও তাই চাইবো, এ একঘেয়ে পোষ-মানা সৌখীনতার চেয়ে। সন্ধ্যাবেলা যে ছবিটা দেখতে গেলুম শ্লোবে, সেটাও আমার আজকার মনের ভাবের সঙ্গে এমন চমৎকার খাপ খেয়ে গেল,-Luief the Viking, গ্রীনল্যাণ্ড ছেড়ে আরও দূরে, অচেনা দেশ খুজে বার কৰ্ত্তে অজানা পশ্চিম মহাসমুদ্রের বুকে পাড়ি জমিয়ে চলে গেল-নিন্তব্ধ রাত্রে জ্যোৎস্না-ঝরা আকাশ-তলায় সদ্য-ফোটা মশুমী ফুলগুলোর দিকে চোখ রেখে এইমাত্র গোলদীঘির ধারে বসে সেই কথাই আমি ভাবছিলুম। -- ভাবতে ভাবতে মনে হোল আমি যেন এই জগতের কেউ নই-আমি যেন বহুদূর কোন নাক্ষত্রিক শূন্য পারের অজানা জগত থেকে কয়েক দণ্ডের কৌতুহলী অতিথির মত পৃথিবীর বুকে এসেচি—ও মশুমী ফুল আমি চিনেও চিনি না, প্ৰতিবেশী মানুষদের দেখেও যেন দেখিনি, এ গ্রহের বৈচিত্র্যের সবটাই নিয়েচি কিন্তু এর একঘেয়েমিট আমার মনে বসতে পারেনি এখনও । তার কারণ আমার গতি-স্বৰ্গীয় গতির পবিত্ৰতা । মনে হোল এই মাত্ৰ যেন ইচ্ছামত পৃথিবীটা ছেড়ে উড়ে আলোকের পাখায় চলে যাবো ওই বহুদূর ব্যোমের গভীর বুকে, যেখানে চিররাত্রির অন্ধকারের মধ্যে একটা নিৰ্জন সার্থীহীন নক্ষত্র মিটু মিটু করে জলচে-ওর চারি পাশে হয় তো আমাদের মত কোন এক জগতে অপরূপের ৰিবৰ্ত্তনের প্রাণী বাস করে-আমি সেখানে গিয়ে খানিকটা কাটিয়ে আবার হয় তো চলে যাবে। কোন সুদূর নীহারিকা পার হয়ে আরও কোন দূরতর জগতের শ্যামকুঞ্জ বীথিতে । , এই সময়ে মৃত্যুর অপূর্ব রহস্য যা সাধারণ চক্ষুর অন্তরাল থেকে গোপন আছে-তার কথা ভেবে মন আবার অবাক হয়ে গেলা-সারা দেহ মন কেবল অবশ হয়ে গেল। • • • কোন বিরাট শিল্প-স্রষ্টার পুণ্য অবদান এ জীবন ?--কি অতলস্পর্শ,
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫
অবয়ব