RR তৃণান্ধুর ভরে যায়-সলতে-খালী তলা, তেঁতুলতলা, শ্যামাচরণ দীনাদের বাগানটা, নেকে, পটুলে, বঁাশতলী-সমস্ত বাগানে যাতায়াতের ধুম পড়ে ময়েচৌ-। সেদিন ঘনমেঘের ছায়ায় জেলে পাড়ার সবাই-স্ত্রী-পুরুষ-বৃদ্ধ-বালকরা ধামা হাতে আমি কুড়চ্চে দেখে আমার চােখে জল এল। জীবনে ওই এদের কত আনন্দের, কত সার্থকতার জিনিস !• • •একটা ছেলে বলচে-ভাই--শুই দোেমকাটায় মুই যদি না আসতাম, তবে এত আমি পেতাম না।!-- কাল সাতবেড়ে মেয়ে দেখতে যাবো। --সারা গ্রামটাতে বিন্বগাছের ফুলের কি ঘন সুগন্ধ ! • • • অশ্বখ তলায়, যেখানে সেখানে এত বেলের গাছও আমাদের এখানে আছে ! কাল সাতবেড়ে গ্রামে গিয়ে একটু বেড়িয়ে এলাম। শশী বাড়িয্যে মহাশয়ের বাড়ী খুব আহার হোল। গ্রামখানিতে সবই চাষা লোকের বাস, ভদ্রলোকের বাস তত নেই, তবে সকলেরই অবস্থা সচ্ছল। মাটীর-ঘর গুলো সেকেলে ধরণের, কোনো নতুন আলো এখনও ঢোকে না বলে সেখানের অকৃত্রিম আবহাওয়াটা এখনও আছে। ফণি কাকা ও আমি দুজনে দক্ষিণ মাঠের দায়েমের পুকুরের ধার দিয়ে বেশ ছায়ায় ছায়ায় বৈকালের দিকে চলে এলাম। নফর কামারের কলাবাগানে কামারবুড়ী কি ফলমূল ও কঁকুড় নিয়ে আসচে দেখলাম। হরিপদ দাদার স্ত্রী বাগানে আম পাড়াচ্চেন। আজকাল রোজ বৈকালেই মেঘ ও ঝড়বৃষ্টি হওয়ার দরুণ কুঠার মাঠে একদিনও বেড়াতে যাওয়া হয় না-রোজই কালবৈশাখী লেগে আছে। সুন্দর বৈকাল একদিনও পেলাম না । তিনটা বাজতে না বাজাতেই রোজ জল আর ঝড়। আজও সকালে নদীতে স্নান করে এলুম। কি সুন্দর যে মনে হয় সকালে স্নানটা করা, স্নিগ্ধ নদীজল, পাখীর কলকাকলী, মাছের খেলা, নতশীর্ষ গাছপালা, নবোদিত সুৰ্য্যদেব । আজ বেড়াতে গেলুম বৈকালে কঁাচিকাটার পুলটাতে। সকালে অনেকক্ষণ চেয়ার পেতে ওদের বেলতলাটায় বসেছিলুম, সেখানে কেবল আডাই হোল । বেলা যখন বেশ পড়ে এসেচে। তখন গেলাম ঠাকুরমাদের বেলতলাটায়, ফিরচি একজন লোক হটেমারীর কুঠী খুজিচে, আমাদের বাড়ীর পাচীলের কাছে। তারপর নিজে গেলাম বেলেডাঙ্গার পুলটায়। একখানা যেন ছবি,
পাতা:তৃণাঙ্কুর - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮
অবয়ব