পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিস্মৃত হইলেন। সেই সময় হইতে কন্যার প্রতিপালনের নিমিত্ত আর একটি পয়সাও তিনি প্রেরণা করিলেন না । কুসীর মেসো-মহাশয় আট টাকা বেতনের সামান্য একটি চাকরী করিতেন। পল্লীগ্রামের খরচ অল্প, সেই আট টাকাতেই কোনোরূপে তাহার দিনপাত হইত। ইহাতে কষ্টে সংসার চলে বটে, কিন্তু সঞ্চয় কিছু হয় না। সে নিমিত্ত কুসীর বয়ঃক্রম যখন দশ বৎসর হইল, তখন তাহার বিবাহের নিমিত্ত ইনি বড়ই চিন্তিত হইলেন। তিনি দেখিলেন যে, অতি সংক্ষেপে বিবাহ দিলেও দুই শত টাকার কমে হয় না। কিন্তু যখন দুইটি পয়সা হাতে নাই, তখন দুই শত টাকা তিনি কোথায় পাইবেন? কুসীর বিবাহের নিমিত্ত রসময়বাবুকে ইনি বারবার পত্র লিখিলেন। রসময়বাবু একখানি পত্রেরও উত্তর দিলেন না। কুসীর বয়স বারো বৎসর উত্তীর্ণ হইয়া গেল, তবুও তাহার বিবাহ হইল না! এই সময় আর একটা বিপদ ঘটিল। কুসীর মেসো-মহাশয় পীড়াগ্রস্ত হইয়া শয্যাশায়ী হইয়া পড়িলেন। কুসীর বিবাহ দেওয়া দূরে থাকুক, তাঁহাদের দিন চলা ভার হইয়া উঠিল। আমাদের চিন্তা করা বৃথা, যিনি মাথার উপরে আছেন, তিনি যাহা করেন, তাঁহাই হয়। মেসো-মহাশয়ের বাটী হইতে কিছুদূরে গ্রামের প্রান্তভাগে বৃহৎ একটি বাগান আছে। সেই বাগানের মাঝখানে একটি পুষ্করিণী আছে। উপরে আম, কঁঠাল, নারিকেল প্রভৃতি ফলের গাছ, নিম্নে ছোট ছোট বন-গাছ, নানপ্রকার তরু-পল্লবসম্বলিত নিবিড় বন দ্বারা পুকুরটির চারি ধার আবৃত রহিয়াছে। পুকুরটিতে বাঁধা ঘাট নাই; সে স্তু আনিতে যায় না। দুই ধারে বন, মাঝখানে গরু ও মানুষত্ত সঙ্কীর্ণ পথ। সেই পথ পুষ্করিণীর একপার্শ্বে কৃটিম ঘাটে গিয়া শেষ হইয়াছে। মানুষে এ সূক্ষ্মান্য একটু ঘাটের মত হইয়াছে এইমাত্র। স্থানটি বালিকা বটে, কিন্তু বয়ঃক্রম দ্বাদশ উত্তীর্ণ হইয়া থাকিবে। তবে তাহার সীথিতে সিন্দুর ছিল না। আমি অবশ্য তাহা দেখি নাই; কারণ, আমি সে স্থানে উপস্থিত ছিলাম না। কিন্তু পুষ্করিণীর অপর পার্শ্বে বনের ভিতর লুক্কায়িত থাকিয়া, ছোট একগাছি ছিপ লইয়া, যে লোকটি পুঁটিমাছ ধরিতেছিল, সে লোকটি সমুদয় দেখিয়াছিল। কি নিমিত্ত বালিকা ক্ৰন্দন করিতেছিল, তাহাও সে বুঝিতে পারিয়াছিল। একবার ঐ লোকটিকে ভাল করিয়া দেখা। ফুট গৌরবর্ণ, বিমল-কান্তি, সত্য-উচ্চভাব-দয়া-মায়া-পূর্ণ মুখশ্ৰী:- নানাগুণসম্পন্ন ঐ যে যুবক বনের ভিতর বসিয়া আছে, উহাকে একবার ভাল করিয়া দেখ। যেদিন কুসী মাতৃহীনা হয়,সেই রাত্ৰিতে বিধাতা আসিয়া উহারই নাম শিশুর ললাটে লিখিয়াছিলেন। যুবকের বয়ঃক্রম সতের কি আঠারো হইবে। কিছুক্ষণ পূৰ্ব্বে বাম হস্তে একটু ময়দা মাখিতে মাখিতে দক্ষিণ হস্তে পুঁটিমাছ ধরিবার ছােট ছিপগাছটি লইয়া, সে এই পুষ্করিণীর ধারে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিল। প্রথম ঘাটের নিকট গিয়া দেখিল যে, সে স্থানে অতিশয় রৌদ্র। সে নিমিত্ত পুকুরের বিপরীত দিকে গিয়া অতি কষ্টে জঙ্গল ঠেলিয়া বনের ভিতর সে মাছ ধরিতে বসিয়াছিল। অল্পক্ষণ পরেই ঘাটের দিকে মানুষের পদশব্দ হইল। সে চাহিয়া দেখিল। অলৌকিক রূপলাবণ্যসম্পন্না এক বালিকাকে সেই নিৰ্জ্জন স্থানে একাকী আসিতে দেখিয়া, যুবক চমকিত হইল। বালিকার যৌবন আগতপ্ৰায়। এ নিবিড় বনে— এই নিৰ্জন স্থানে, কোন দেবকন্যা আগমন করিলেন না কি! এমন রূপ তো কখনও দেখি নাই । অনিমেষ নয়নে সে """ firls six gas 38 - www.amarboicom a :8(?