পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপস্থিত হইলেন। হরিদ্বারের নিকট জ্বালাপুর নামক একখানি গ্ৰাম আছে। সেই গ্রামের প্রান্তদেশে বৃহৎ একটি আমবাগান আছে। একদিন অপরাহে গৌরীশঙ্কর ও তাঁহার মাতা সেই বাগানের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন। পথশ্রমে কাতর হইয়া দুই জনে এক বৃক্ষতলে বসিয়া পড়িলেন। সেই বৃক্ষতলে আর একটি পুরুষ বসিয়াছিলেন। লোকটি দেখিতে বাঙ্গালীর মত, পরিধান বাঙ্গালীর মত, তবে চাদরখানি তিনি মাথায় বাধিয়াছিলেন। সাধু-সন্ন্যাসীর মত তাহার বেশভূষা ছিল না। ভদ্র বাঙ্গালী সন্তানের যেরূপ হয়, তাহার পরিধেয় বস্ত্র ও ভাব-ভঙ্গী সেইরূপ ছিল। তাহার বয়স ত্ৰিশ বৎসরের কিছু অধিক হইবে। সাধু-সন্ন্যাসী দেখিলেই, গৌরীশঙ্করের মাতা পুত্রের কথা জিজ্ঞাসা করেন। ইনি সাধু নহেন; সুতরাং বৃদ্ধ তাঁহাকে কোনও কথা জিজ্ঞাসা করিলেন না । সেই লোকটি এক বৃক্ষমূলে ঠেস দিয়া, অৰ্দ্ধশায়িতভাবে বসিয়া বিশ্রাম করিতেছিলেন। মাতা ও পুত্র সেই স্থানে আসিয়া তাঁহার নিকট হইতে কিছুদূরে উপবেশন করিলেন। বাঙ্গালী তাহাদের প্রতি একবার কটাক্ষপাত করিবামাত্র তিনি চমকিত হইলেন। তাহার পর, কিয়ৎক্ষণের নিমিত্ত তিনি স্থিরদৃষ্টিতে গৌরীশঙ্করকে নিরীক্ষণ করিলেন। গৌরীশঙ্করকে ভাল সম্বোধন করিয়া বলিলেন, — “মা! আমি বাঙ্গালী, তোমরা আমার দেশস্থ লোক। কতদিন ধরিয়া তোমার পুত্রের এ দশা হইয়াছে?” সামান্য এই কয়টি কথা শুনিবা মাত্র বৃদ্ধার মনে ক্রূিপ এক অনিৰ্ব্বচনীয় আশার সঞ্চার হইল। সকল লােকেই প্রথম জিজ্ঞাসা করে,- “তুমীর পুত্রের কি হইয়াছে?” ইনি সে কথা জিজ্ঞাসা করিলেন না । গৌরীশঙ্করের যাহা হইয় সঁহাঁ যেন তিনি সম্পূর্ণভাবে অবগত আছেন, কথার ভাবে সেইরূপ প্ৰকাশ হইল। তাঁহারুদুয়ািদক্ষিণ্য ভাবে, তাঁহার সুমধুর কথায়, বৃদ্ধার তাপিত-হৃদয় যেন শীতল হইল । কে যেন বলিয়া দিল যে, ইনি সামান্য পুরুষ নহেন। ভাগ্যবলে আজ তুমি পাইলে; এইবার তোমার দুঃখের অবসান হইল। তাহার প্রশ্নের কোনওরূপ উত্তর না দিয়া, বৃদ্ধ তাড়াতাড়ি তাহার পা দুইটি ধরিতে যাইলেন। বৃদ্ধাকে নিবারণ করিয়া তিনি বলিলেন,— “ছি! মা! আমন কাজ করবেন না। আপনি বৃদ্ধা, আমার মাতৃস্থানীয়া।” গৌরীশঙ্করের মাতা বলিলেন, — “বাছা! ভগবান আমাকে যেন বলিয়া দিতেছেন যে, তোমা হইতে আমার পুত্র আরোগ্যলাভ করিবে। বাছা! এই দুঃখিনীকে, তুমি এ দায় হইতে উদ্ধার কর। অধিক আর তোমাকে কি বলিব, এই পুত্রটি ভিন্ন জগতে আমার আর কেহ নাই। ইহার এই দশায় আমি মৃতপ্রায় হইয়া আছি, পাগলের ন্যায় আমি দেশে দেশে ঘুরিতেছি। তুমি আমার প্রতি কৃপা কর।” বাঙ্গালী উত্তর করিলেন,- “আমি কিছু করিতে পারিব কি না, তাহা নিশ্চয় করিয়া বলিতে পারি না। তবে মা, আপনার পুত্রকে সুস্থ করিতে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করিব। নিকটে এই গ্রামখানির নাম জ্বালাপুর, এ স্থানে পাণ্ডাদের বাস। আমি আজ দুই দিন এ স্থানে আসিয়াছি। একজন পাণ্ডার বাটীতে বাসা লইয়া আমি অবস্থিতি করিতেছি। আমার সঙ্গে বাসায় চলুন। আজ রাত্ৰিতে আপনার পুত্রের নিমিত্ত আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করিব।” বলা বাহুল্য যে, গৌরীশঙ্করের মাতা অতি আগ্রহে একথায় সম্মত হইলেন। তিন জনে ধীরে ধীরে জ্বালাপুর অভিমুখে চলিলেন। অল্পীক্ষণ পরে তিন জনে সেই পাণ্ডার বাটীতে গিয়া উপস্থিত ନ୍ଯୂ ୪ft_visit 8DS sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro