পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৪৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ক্ষতি হইবে। তুমি যদি ভাই, এখনি পাঁচশত টাকা দাও, তাহা হইলে আমার বড় উপকার হয়। আজ সন্ধ্যা বেলা নিশ্চয় এ টাকা তোমাকে আমি ফিরিয়া দিব। কেবল ঘণ্টা কয়েকের জন্য আমি এ টাকা চাই।” আশ্চৰ্য্যান্বিত হইয়া মুস্তাফি বলিলেন,- “পাচশত টাকা! জনমে। কখনও আমার একত্র পাঁচশত টাকা হয় নাই। জমি বেচিয়া একবার তিন শত টাকা পাইয়াছিলাম, তা পাঁচ ছয় দিনে সে সব ফুরাইয়া গিয়াছিল। পাঁচ শত টাকা আমি কোথায় পাইব?” মাশ্চন্টক বলিলেন,- “কেবল ঘণ্টা কয়েকের জন্য। সন্ধ্যা বেলা নিশ্চয় তোমাকে আমি এ টাকা ফিরিয়া দিব ।” মুস্তাফি বলিলেন,- “তা বটে। কিন্তু এক মিনিটের জন্য হইলেও এ টাকা আমি কোথায় পাইব? পাঁচ টাকা চাহিলে আমি দিতে পারি না, পাঁচশত টাকা আমি কোথায় পাইব?” মাশ্চন্টক বলিলেন,- “কেবল ঘণ্টা কয়েকের জন্য। এখন বারোটা বাজিয়াছে, ঠিক সন্ধ্যা সাতটার সময় তোমার বাড়ীতে আমি এ টাকা দিয়া আসিব । দাও, ভাই! আমার এই উপকারটীি করিতে হইবে। বড় বিপদে পড়িয়াই আমি তোমার নিকট আসিয়াছি। তুমি আমার চিরকালের বন্ধু। বালককাল হইতে তুমি আমার কত উপকার করিয়াছ। আজ এই উপকারটীি করিয়া, চিরকালের নিমিত্ত আমাকে কিনিয়া লও। কেবল পাঁচ ছয় ঘন্টার জন্য।” মুস্তাফি বলিলেন,- “টাকা আমি পাব কোথা!” মাশ্চন্টক এইবার খুলিয়া বলিলেন, — “আফিসের তোমার নিকট থাকে। কেবল ঘণ্টা কয়েকের জন্য ।” (G) জিব কাটিয়া মুস্তািফ বললেন,—“আফিসের টুর্ণ বাপরে! ও কথা মুখে আনিও না।” দিব। কাল প্ৰাতঃকালে পুনরায় তুমি র টাকা পূর্ণ করিয়া রাখিবে, তাহাতে আর দোষ

  • y*

মুস্তাফি বলিলেন,- “ভাই! প্ৰাণ আমি আফিসের টাকায় হাত দিতে পারিব না। এ কথা তুমি মুখে আনিলে কি করিয়া, তাই আমি ভাবিতেছি।” এইরূপে দুই জনে প্ৰায় এক ঘণ্টা ধরিয়া কচলা-কচালি হইতে লাগিল। মাশ্চটকের মোহিনী শক্তির প্রভাবে মুস্তাফির মন ক্রমে শিথিল হইয়া আসিল । অবশেষে তিনি বলিলেন,- “সাহেব যদি আজ হিসাব দেখেন, তাহা হইলে যে আমাকে জেলে যাইতে হইবে!” মাশ্চন্টক বলিলেন, — “অসুখ হইয়াছে বলিয়া তুমি আজ বাড়ী চলিয়া যাও। সন্ধ্যা বেলা তোমাকে আমি টাকা দিয়া আসিব। কা’ল দশটার সময় আস্তে আস্তে আফিসের টাকা পূর্ণ করিয়া রাখিবে । তাহা হইলে সকল ভয় যাইবে।” মুস্তফি মনে মনে ভাবিলেন,- “সেই সহায়হীনা তের বৎসরের বালিকার জন্য আজ দেখিতেছি, আমাকে কুকৰ্ম্ম করিতে হইল। হে জগদীশ্বর! তুমি আমার অপরাধ ক্ষমা কর। হে জগদীশ্বর! তুমি আমাকে রক্ষা কর।” মনে মনে এইরূপ ভাবিয়া কাপিতে কঁাপিতে মুস্তফি মহাশয় আফিসের টাকা হইতে বৈবাহিককে পাঁচ শত টাকা প্ৰদান করিলেন। বৈবাহিক টাকা লইয়া প্ৰস্থান করিলেন। অসুখ হইয়াছে বলিয়া মুস্তাফি বাড়ী যাইলেন না। প্ৰাণ হাতে করিয়া বিষগ্ন বদনে তিনি কাজ করিতে व्ञाब्लिन्म । 8వ দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comশ্মির্ত্যািক্যনাথ রচনাসংখ্যাই