পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অন্যমনস্ক হইয়া ভানুমতী বসিয়াছিলেন। ভানুমতী তাহাকে দেখিতে পাইলেন না। সহসা কুঁজে রাজার হাত ভানুমতীর গায়ে ঠেকিয়া গেল। শশব্যস্ত হইয়া ভানুমতী পলায়ন করিতে চেষ্টা করিলেন; কিন্তু দুৰ্ভাগ্যক্রমে ভানুমতীর টুপি গাছের ডালে লাগিয়া সেইস্থানে বুলিতে লাগিল। কুঁজে রাজা তখন ভানুমতীকে দেখিতে পাইয়া তাঁহাকে ধরিয়া ফেলিল ও চুল ধরিয়া তাঁহাকে বাড়ীর দিকে লইয়া যাইতে চেষ্টা করিল। প্ৰাণপণে আঁচড়াইয়া-কামড়াইয়া ভানুমতী তাহার হাত হইতে মুক্ত হইতে চেষ্টা করিতে লাগিলেন। তাঁহাতে কুঁজো রাজা অতিশয় কুপিত হইল। রাগে তাহার চক্ষু দুইটি রক্তবর্ণ হইল। রাগে সে আপনার দন্ত কড়-মড় করিতে লাগিল। রাগে ভানুমতীকে কাটিবার চেষ্টা করিল। বামহাতে ভানুমতীর চুল ধরিয়া, দক্ষিণ হাতে কোমর হইতে আসি বাহির করিয়া সে ভানুমতীর গলা কাটিয়া ফেলিতে উদ্যত হইল। গলা কাটিবার নিমিত্ত সে খড়গ উত্তোলন করিল। কোপ মারে আর কি! এমন সময় পক্ষিীরাজ ঘোড়ার উপর রুস্তম সেইস্থানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। শমশের তলোয়ারের পশ্চাৎদিক দ্বারা রুস্তম কুঁজোর দক্ষিণ হাতে সবলে আঘাত করিলেন। কুঁজোর হাত হইতে আসি ঋলিত হইয়া দূরে গিয়া ভূমির উপর পতিত হইল। তৎক্ষণাৎ রুস্তম অশ্ব হইতে অবতরণ করিয়া কুজোর সেই সাত হাত লম্বা দাড়ি ধরিয়া ফেলিলেন। তাহার পর শমশের তলোয়ার উত্তোলন করিয়া তিনি বলিলেন, — “দুৰ্ব্বত্ত! এখন যদি তোমাকে কাটিয়া ফেলি, তাহা হইলে কে তোমাকে রক্ষা করিতে পারে।” রুস্তমের হাতে শমশের খড়গ দেখিয়া কুঁজে রাজা ঘোরতর বিস্ময়াপন্ন হইল। ভয়ে তাহার শুশ্ৰষা করিবার নিমিত্ত আদেশ করিলেন। তাহার পর রুস্তম তারার দাই-মায়ের নিকট গমন করিয়া ভাই-ভগ্ৰী কিরূপে কুঁজের জাদু হইতে নিভৃতি পাইবে, সেই কথা জিজ্ঞাসা করিলেন। দাই-মা বলিল যে,- “কুজোর সাত হাত দাড়ি কাটিয়া সেই দাড়ি পোড়াইয়া সাদি ও তারার শরীরে লেপন করিলেই দুইজন উদ্ধার পাইবে।” রুস্তম কুজো রাজার বাটীতে প্ৰত্যাগমন করিয়া ভানুমতীকে পক্ষিরাজ ঘোড়ার উপর আপনার পশ্চাৎদিকে বসাইয়া তৎক্ষণাৎ ইরাণ নগরে গমন করিলেন। ভানুমতীকে পাইয়া ইরাণের রাজা, রাণী ও সমুদয় প্ৰজাবৰ্গ ঘোরতর। আনন্দিত হইল। তাহার পর তিনি সেই প্রান্তরে আসিয়া নরমুণ্ড রূপধারী সাদি ও কাকরূপী তারাকে লইয়া নিশাপুরে প্রত্যাগমন করিলেন। সাদি ও তারাকে দাইয়ের বাটীতে রাখিয়া তিনি পুনরায় ইরাণ নগরে গিয়া কুঁজো রাজার গুরুকে লইয়া নিশাপুরে প্রত্যাগমন করিলেন। যে ঘরে কুজো রাজাকে কারাবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছিলেন, সেই ঘরে গুরুকে লইয়া তিনি প্ৰবেশ করিলেন। স্বভাবতই গুরু দেখিতে অতি কদাকার ছিল। নাসিকা ও কর্ণবিহীন হইয়া এখন আরও বিশ্ৰী হইয়াছিল। গুরুর দুরবস্থা দেখিয়া কুজো রাজা অনেক খেদ করিয়া কাঁদিতে লাগিল। কিন্তু রুস্তম তাহাকে প্ৰবোধ দিয়া বলিলেন, — “দুঃখ করিতে হইবে না । তোমার দশাও ঐরূপ হইবে। মজার গল্প sNAls viði (SS BS! ro www.amarboicom ro 20