পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘোর সাৰ্ব্বনাশের তুক, এ যে-সে তুক নহে। হাঁ করিয়া গরুর মুখ বাড়ীর দিকে রহিয়াছে। এই বাড়ীতে গরু ঘাস-জল খাইবে, অর্থাৎ এই বাড়ীর লোকের পরমায়ু সে ভক্ষণ করিবে।” এই কথা শুনিয়া মাতুঠাকুরাণীর মুখ ভয়ে শুষ্ক হইয়া গেল। তিনি বলিলেন, “তাই তো বলি যে, কাল রাত্রি হইতে আমার পেট এত হুটপাট করে কেন! ঐ গো-ভূত আমার পেটের পেট এত হুটপাট করে কেন। ঐ গো-ভূত আমার পেটের ভিতর প্রবেশ করিয়াছে। শিশু বাছুরের ন্যায় আমার পেটের ভিতর সে ছুটিাছুটি করিতেছে। গরুতে যেরূপ ঘাস ছিড়িয়া খায়, পেটের নাড়ীভৃড়ি সে সেইরূপ ছিড়িয়া খাইতেছে।” বলা বাহুল্য যে, বিধবার ঘোরতর ত্রাস হইল। তাহার গালাগালির শব্দে কয়েক দিন গ্ৰাম কম্পিত ও স্ফটিত হইতে লাগিল। যাহা হউক, গীেরবিণী তাঁহাকে বিপদ হইতে রক্ষা করিল। কিন্তু তিনটি নেকড়ার মালা তাঁহাকে গলায় পরিধান করিতে হইল। ধনুকধারী আসিয়া যখন সে স্থানে দণ্ডায়মান হইয়াছিল, তখন সকলে দেখিল যে, তাহার হাতে ও কাপড়ে সিন্দুর লাগিয়াছে। তাহা দেখিয়া সকলে বুঝিতে পারিল। বড়ালমহাশয়কে লক্ষ্য করিয়া, আঙ্গুল মটকাইয়া, আকাশের দিকে চাহিয়া, বিধবা রাত্রিদিন গালি দিতে লাগিলেন। তাহা শুনিয়া বড়ালিনী একদিন তাহার সহিত ঝগড়া করিতে গিয়াছিলেন। কিন্তু মহারথী কর্ণের সহিত যুদ্ধ করিতে গিয়া নকুলের যে দশা হইয়াছিল, তাহারও তাহাই হইল। রণে ভঙ্গ দিয়া অবিলম্বে তাহাকে পলায়ন করিতে হইল । গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা গলায় বড় বড় নেকড়ার পুঁটুলি পরিধান করিল। কিছুদিন গ্রামের লোকের গলদেশ অপূৰ্ব্ব শোভা ধারণ করিল। গ্রামে নানারূপ তুক হইতে লাগিল। ভুকের ভারসীম অধিকতর ভয়ঙ্কর হইয়া উঠিল। গ্রামের লোক ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়িল। একদিন প্ৰান্তর্ভুকালে সকলে দেখিল যে, অনেকের দ্বারে তিনটি করিয়া গোবরের পুত্তলিকা পড়িয়া লির কপালে সিন্দুর ছিল, যেন বলিদানের নিমিত্ত উৎসর্গ করা হইয় র পর তাহদের গলদেশ কীৰ্ত্তিত হইয়াছিল। গলা-কাটা পুত্তলি দেখিয়া গ্রামের র প্রাণ উড়িয়া গেল। সকলে ভাবিল যে, তাহাদের প্ৰাণ-পুত্তলির গলদেশ এইরূপে কৰ্ত্তিত হইবে এবং তাহাদের পরমায়ু লইয়া রায়-গৃহিণীকে প্ৰদান করা হইবে । অমাবস্যা আসিল। দৈবক্রমে সেইদিন শনিবার পড়িল। অতি সাংঘাতিক দিন। গ্রামে গ্রামে সেদিন হুলস্থূল পড়িয়া গেল। জনরব উঠিল যে, সেইদিন বড় বাড়ীর লোকেরা নিশাজাগরণ করিবে, অর্থাৎ সন্ধ্যার পর কালীর প্রতিমা সদ্য গড়িয়া তাঁহার পূজা হইবে। তাহার পর শিবাবলি প্রদত্ত হইবে। ছাগমাংস, কলামাংস, মহামাংস ভক্ষণ করিয়া, শৃগাল-শৃগালীগণ সম্মুখের দুই পা তুলিয়া আনন্দে নৃত্য করিতে থাকিবে। অবশেষে একটি ডাব-নারিকেল ছুলিয়া তাহার মুখ টাকার ন্যায় চক্রাকার করিয়া কাটিতে হইবে। টাকার ন্যায় খোলার কিয়দংশ এরূপভাবে নারিকেলের সহিত সংলগ্ন হইয়া থাকিবে, যেন বাক্সর ডালার মত তাহাকে খুলিতে ও বন্ধ করিতে পারা যায়। রাত্রি দুই প্ৰহরের সময় রায়-গৃহিণীর যাদুকর সেই নারিককেলটি লইয়া গ্রামবাসীদিগের দ্বারে আসিয়া তিনবার ডাক দিবে,-“শশধর! শশধর! শশধর!” শশধর যদি উত্তর প্রদান করে, তাহা হইলে, তাহার প্রাণ তৎক্ষণাৎ নারিকেলের ভিতর প্রবেশ করিবে: ও গুণী ব্যক্তি তৎক্ষণাৎ নারিকেলের মুখ বন্ধ করিয়া দিবে। সেই নারিকেলের জল রায়-গৃহিণী পান করিলে তিনি রোগ হইতে মুক্ত হইবেন । কিন্তু যে লোক উত্তর দিবে, তাহার প্রাণ বিনষ্ট হইবে । তিন ডাকে শশধর। যদি উত্তর প্রদান না করে, তাহা হইলে গুণী ব্যক্তি হলধরের দ্বারে

      • firls six g3 8.8l www.amarboicom a AA