পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৬৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰায় এক ঘণ্টাকাল সুবালা তাহাকে লইয়া বেড়াইলেন। যখন নিতান্ত শ্ৰান্ত হইয়া পড়িলেন, তখন অতি ধীরে ধীরে তিনি তাহাকে তাহার মায়ের কোলে সমৰ্পণ করিলেন। “বৈকালবেলা পুনরায় আসিয়া দেখিব,”— এই কথা বলিয়া তিনি গৃহে প্রত্যাগমন করিলেন। বাটী গিয়া বড়ালমহাশয়কে বলিয়া, কন্যাটির জন্য তিনি ভাল চিকিৎসক আনাইলেন। কিন্তু সুবালাকে দেখিয়া, সুবালার মধুর কথা শুনিয়া, সুবালাকে স্পর্শ করিয়া, সে রোগ হইতে মুক্ত হইয়াছিল। চিকিৎসা বড় আর আবশ্যক হইল না। সেই অবধি গ্রামের লোকের মনে বিশ্বাস জনিল যে, সুবালা লক্ষ্মীস্বরূপা দেবী। তিনি একবার স্পর্শ করিলে রোগ দূরে পলায়ন করে। রোগ দ্বারা কেহ আক্রান্ত হইলে আগ্রহসহকারে তাহার বাড়ীর লোক সুবালাকে ডাকিয়া আনিত। অধিক বয়স্ক ব্ৰাহ্মণ অথবা ব্ৰাহ্মণী হইলে, “সুবালা তাহার মস্তক একবার স্পর্শ করুন,” এই বলিয় তাহার প্রার্থনা করিত। অপর জাতি হইলে সুবালার পদধূলি অতি ভক্তিভাবে মস্তকে গ্ৰহণুকেরির্ত। সুবালা সম্বন্ধে এইরূপ অনেক গল্প গ্রামে ধ্ৰুত আছে। এই সমুদয় ঘটনা রায়-গৃহিণী “আমাদের সুবালা দিদি এখন গ্রামের হইলেন। এ গ্রামে ভূত-প্ৰেত। আর আসিতে সাহস করিবে না, তুকতাক করিয়া কেহ প্ৰাণ বিনষ্ট করিতে চেষ্টা করিবে না । অনাহারে অথবা বিনা চিকিৎসায় আর আমাদের মরিতে হইবে না। আমাদের সকল দুঃখ এইবার দূর হইবে।” এইরূপ ভাবিয়া গ্রামের লোকের আনন্দের আর সীমা রহিল না। বিধাতাও গ্রামের লোকের প্রতি সুপ্ৰসন্ন হইলেন। কয় বৎসর যথাসময়ে সুবৃষ্টির অভাবে ভালরূপ ধান্য উৎপন্ন হয় নাই। এ বৎসর সুবৃষ্টি হইল। লোকের গোলায় ধান রাখিবার জন্য এ বৎসর স্থান হইবে না, এইরূপ সম্ভাবনা হইল। সে সমুদয় ভূমি বালি পড়িয়া নষ্ট হইয়া গিয়াছিল, এ বৎসর বন্যায় সেই বালি হয়। ধুইয়া গেল অথবা তাহার উপর গভীরভাবে পলি পড়িল। সে সমুদয় পূৰ্ব্বাপেক্ষা অধিকতর উৰ্ব্বারা হইল। সেজন্যও গ্রামের লোকের আহাদের আর সীমা রহিল না। যেরূপ মানুষের প্রতি, জীবজন্তুর প্রতিও সুবালার সেইরূপ দিয়ামায়া ছিল। পশুপক্ষিগণও তাহার গুণে মুগ্ধ হইয়াছিল। sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro