পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যে রণ ভীত হয় না ও রণ হইতে পরাজমুখ হয় না এবং যে ব্যক্তি ধৰ্ম্মযুদ্ধে মৃত হওয়াও শ্ৰেয়ঃ জ্ঞান করে, সেই ব্যক্তি কর্তৃক ত্রিভুবন জিত হইয়া থাকে। ফলকথা, এই বীরধৰ্ম্ম অবলম্বনে লোক মহাবলপরাক্রমশালী হয়,-“যেন লোকা ভবিষ্যন্তি মহাবলপরাক্রমঃ।” তাহার পর পূর্বেই বলিয়াছি যে, ইহার প্রভাবে লোক শোকতাপ হইতে নিস্তার পায়, অনুবান্ত্রের কষ্ট পায় না, অবশেষে পরলোকে “ব্রহ্মসাযুজ্য লাভ করে!” বিনয় পুনরায় বলিলেন,- “সংক্ষেপে তোমাকে এই বীরধৰ্ম্মের কথা বলিলাম। এ ধৰ্ম্ম অবলম্বন করিলে প্ৰথমেই সত্যের আশ্রয় লইতে হয়। কথায়-বাৰ্ত্তয়, আচার-ব্যবহারে সকল বিষয়ে সত্য। সত্য, সত্য, সত্য ভিন্ন আর অন্য উপায় নাই। যতদিন না বাঙ্গালী সত্যের আশ্রয় লয়, ততদিন দেশের উন্নতি হইবে না। মহাদেব বলিয়াছেন যে—“আমার প্রবৰ্ত্তিত এই ধৰ্ম্মের নিয়মাদি সুখে-স্বচ্ছন্দে ও বিনা আয়াসে লোক প্রতিপালন করিতে পরিবে। ভবিষ্যতে মানুষের অবস্থা কিরূপ হইবে, তাহা বুঝিয়া তাহাদের উন্নতি ও পরিত্রাণের নিমিত্ত আমি এই সমুদয় উপদেশ প্ৰদান করিলাম।” অন্যান্য ধৰ্ম্মের নিয়ম অতি কঠোর। একগালে চড় মারিলে কয়জন লোক অন্য গাল বাড়াইয়া দিতে পারে? যে স্থলে জীবহিংসা দূরে থাকুক, কাটা’ শব্দ উচ্চারণ করিলেও দোষ হয়, সে স্থলে গাভীবৎসকে বঞ্চনা করিয়া দুগ্ধ কিরূপে পান করিতে পারা যায়? চাউল ভক্ষণ করিয়া কিরূপে প্ৰাণধারণা করিতে পারা যায়? কারণ, ধান্যের গাছ তাহার শিশু সন্তানদিগের জন্য যে আহার সঞ্চয় করিয়া রাখে, তাহাকেই চাউল বলে, তাহাই অপহরণ করিয়া আমরা ভক্ষণ করি। ধৰ্ম্মের কঠোর নিয়ম প্রতিপালন করিতে না পারিয়া মানুষ কপটাচারী হইয়া, পর সত্যপথ হইতে ভ্ৰষ্ট হয়। ”সত্যকে পরিত্যাগ করিলেই বিপদ । সেজন্য কৃপা করিয়া মহাদেব মানুষকে এই বীর্যপূৰ্বপ্রদান করিয়াছেন।” সুবালা বলিলে,-“মৃত্যুকালে মা আয়ুৰ্ব্বেগুটিকয়েক উপদেশ দিয়াছিলেন। তখন তাহা আমি ভালরূপ বুঝিতে পারি নাই। গুঞ্জগুলি কিন্তু আমি মনে গাঁথিয়া রাখিয়াছি। মা বলিয়াছিলেন,— সুবালা! কখন অসুৰ্জক্টথাি বলিও না, অসত্য আচরণ করিও না, নিষ্ঠুরতা ও নীচতা সৰ্ব্বদা পরিত্যাগ করবে।” অসত্য কথা কাহাকে বলে, তাহা আমি জানি। পরদ্রবে: অপহরণ, প্রতারণা প্রভৃতি অপরাধকে বােধ হয় অসত্য আচরণ বলে। জীবকে কষ্ট দেওয়াকে নিষ্ঠুরতা বলে। আমি তােমাকে সেই চড়ুই পক্ষীর গল্প করিয়াছি। পাখীটিকে ধরিয়া তাহার পায়ে সূতা বঁধিয়া আমি খেলা করিতেছিলাম। মা বলিলেন, ‘এরূপ কাজকে নিষ্ঠুরতা বলে,” তৎক্ষণাৎ আমি সে চড়ুই পক্ষী ছাড়িয়া দিলাম। সেই অবধি কোন পক্ষী আমি পিঞ্জরে আবদ্ধ করিয়া রাখি নাই। কিন্তু তবু দেখ, কত পক্ষী আমার মাথায়, আমার স্কন্ধে বসিয়া আমাকে আদর করে। আহা! আমার শালিক পাখীটিকে এখনও ভুলিতে পারি নাই। নিষ্ঠুরতা কাহাকে বলে, তাহা একপ্রকার বুঝিয়াছি। নীচলোকের ন্যায় কুভাষা ব্যবহার করা, উপায় সত্ত্বেও তাহাদের ন্যায় ময়লা অবস্থায় দিন যাপন করা,-- ইহাকেই বোধ হয় নীচতা বলে । কিন্তু মায়ের উপদেশ এখনও যে আমি ভালরূপে বুঝিয়াছি, তাহা বোধ হয় না।” ԳՀ8 fi:Ilă zi, o ga se - www.amarboi conf**