নিগুঢ় ছায়া যেন সেদিন তাহার কালো চোখ দুটিতে সে দেখিতে পাইয়াছিল—তাই সে চুপ করিয়া রহিল, তবু যজ্ঞদত্ত অনেক কথা ভাবিতে লাগিল । সুরমার কথাই বেশী ভাবিল। বর্ষার দিনে বাদলপোকাগুলো হঠাৎ যেমন ঘর ভরিয়া দেয়াতেমন তাহার মনটা যেন অস্বস্তিতে ভরিয়া উঠিল, কিন্তু তাহাদিগের নিভৃত বাসগহরটা যেমন কিছুতেই খুজিয়া বাহির করা যায় না, তেমনি সুরমার মুখের কথাগুলো মনের কোন গুপ্ত আকাজক্ষার ভিতর দিয়া দলে দলে বাহির হইতে লাগিল, সেইটাই খুজিয়া পাইল না। চোখে তার এমনি ঝাপসা জাল লাগিয়া রহিল যে, কোনক্রমেই সুরমার মুখখানি সুস্পষ্ট দেখিতে পাইল না । sts বিবাহ করিয়া যজ্ঞদত্ত বধু ঘরে আনিল। বিকারগ্ৰস্ত রোগী ঘরে লোক না থাকিলে যেমন সমস্ত শক্তি এক করিয়া জলের ঘাড়াটার পানে ছুটিয়া গিয়া। আঁকড়াইয়া ধরে, সুরমা তেমনি করিয়া নূতন বধূকে আলিঙ্গন করিল। নিজের যতগুলি গহনা ছিল পরাইয়া দিল, যতগুলি বস্ত্র ছিল সমস্ত তাহার বাক্সে ভরিয়া দিল । শুল্কমুখে সমস্ত দিন ধারয়া বধু সাজাইবার ধুম দেখিয়া যজ্ঞদত্ত মুখ চুন করিয়া রহিল । গাঢ় স্বপ্নটা সহ্যু হয়-কেননা, অসহ্য হইলেই ঘুম ভাঙ্গিয়া যায়, কিন্তু জাগিয়া স্বপ্ন দেখাটায় যেন দম আটকাইতে থাকে, কিছুতেই সেটা শেষও হয় না-ঘুমাও ভাঙ্গে না । মনে হয় একটা স্বপ্ন, মনে হয় এটা সত্য, “আলো ও ছায়া’র দু’জনেরই এই ভাবটা আসিতে লাগিল । একদিন ঘরে ডাকিয়া যজ্ঞদত্ত কহিল, ছায়াদেবী ! त् ियख्छ्रं ? আলোমশাই বললে না ? মুখ নত করিয়া সুরমা কহিল, আলোমশাই! R
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫২
অবয়ব