আমার ঘরে এসে দেখ দাদা, বৌ বুঝি বঁাচে না । দুই-তিনজন ডাক্তার আসিয়া দেখিয়া বলিল, প্ৰবল বিকার । সমস্ত রাত্ৰি বিফল পরিশ্রম করিয়া তাহারা ভোরবেলায় চলিয়া গেল । সমস্ত রাত্ৰি যজ্ঞদত্ত মাথার শিয়রে বসিয়া রহিল, কতবার মুখের কাছে মুখ লইয়া গেল, বধু কিন্তু স্বামীকে চিনিতে পারিল না। ডাক্তার চলিয়া গেলে যজ্ঞদত্ত কঁাদিয়া উঠিল, বৌ একবার চেয়ে দেখি, একবার বল ক্ষমা করলে ? *్క সুরমা পায়ের উপর মুখ লুকাইয়া অফুট বলিল, বৌদিদি, কেন এ শাস্তি দিয়ে গেলে ? কে কথা কহিবে ? সমস্ত মান, অভিমান, তাচ্ছিল্য, অবহেলা সরাইয়া দিয়া সে ধীরে ধীরে অনন্তে মিলাইয়া গেল । সুরমা কহিল, দাদা কোথায় ? দাসী উত্তর করিল, কাল তিনি পশ্চিমে চলে গেছেন । কবে আসবেন ? জানিনে, বোধ হয়। শিগগির আসবেন না । আমি কোথায় থাকিব ? সরকারমশায়কে বলে গেছেন, যত ইচ্ছে টাকা নিয়ে তোমার যেখানে খুশি থেকে । সুরমা আকাশপানে চাহিয়া দেখিল, জগতের আলো নিভিয়া গিয়াছে - সূৰ্য নাই, চন্দ্ৰ নাই, একটি তারাও দেখা যায় না। পাশে চাহিয়া দেখিল, সে অফুট ছায়াটিও কোথায় সরিয়া গিয়াছে’-চতুর্দিক ঘনান্ধকার, বক্ষ-স্পন্দন তাহার যেন বন্ধ হইয়া আসিতেছে, চক্ষের জ্যোতি মান ও স্থির হইয়া আসিতেছে। উধব নোত্রে সুরমা ডাকিল, যজ্ঞদাদা ! তার পর ধীরে ধীরে শুইয়া পড়িল । प्र्ष्टुं
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৪
অবয়ব