পাতা:দর্পণ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাল নেই মেয়েমানুষের মতই সে যেন ব্যবহার করে এসেছে সতীরাণীর সঙ্গে দশ বছর ধরে। এত কষ্ট করে এত টাকা সে যে রোজগার করছে তা যে শুধু সতীরাণীর জন্য, এতটুকুও কি সে বোঝে না ? আর ইচ্ছা করলে সে যে প্ৰচণ্ড শাস্তি দিতে পারে তাকে, চিরদিনের জন্য ত্যাগ করতে পারে, একটা মাসোহারা দিয়ে আরেকটা বিয়ে করতে পারে সাত দিনের মধ্যে, এ জৱানও কি সতীরাণীর নেই ? নেই বলেই তো মনে হয়। “ত্যাগ করে । করো ত্যাগ। আমি বঁচি ৷” এই জবাব দিয়েছিল সতীরাণী, বলেছিল, “করো বিয়ে । বিয়ে করে । আমি বঁচি ।” হেরম্ব ঝগড়া করে নি, ভয়ও দেখায় নি। সতীয়াণীকে শুধু এই সত্যটা বুঝিয়ে দেবার চেষ্টা করছিল যে যার সঙ্গে তার চিরকাল কাটাতে হবে, যার ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর তার সমস্ত ভবিষ্যৎ নির্ভর করে, তার সঙ্গে এরকম ব্যবহার করা উচিত নয়। এই জবাব দিয়েছিল সতীরাণী সেই উপদেশের । কি স্পৰ্দ্ধা একটা গরীবের মেয়ের যাকে সে দাসদাসী আত্মীয় কুটুম্ব ভরা অট্টালিকার কত্রী করেছে, যার কোন সখি কোন আবদার সে অপূর্ণ রাখে নি । পরাজয়ের জিদ বজায় না থাকায়, অসহ আক্ৰোশে হেরম্বের মন পুড়ে যেতে থাকে। একবার, শুধু একটিবার যদি সতীরাণী নত হত, হুকুম মানত ৷ পাচ বছরের জন্য সে রেহাই দিত। তাকে-দশ বছরের জন্য রেহাই দিত। গৃহিনীর সমস্ত অধিকার দিয়ে এতদিন যেমন রেখেছিল তেমনি মাথায় করে রাখত। কিন্তু নিজে কোনদিন স্বামীর 'অধিকার দাবী করত না। ’ খানিক তফাতে নতুন বসানো টিউবওয়েল থেকে একটি সাঁওতাল মেয়ে হঁড়িতে জল ভরে, হেরম্ব চেয়ে থাকে তার দিকে । অল্পদিনের S))8