পাতা:দিনের পরে দিন - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতিভূষণের সংক্ষিপ্ত জীবনকাহিনী বিভূতিভূষণের জন্ম হয় তাঁর মাতুলালয় কাঁচড়াপাড়ার সমীপবতী ঘোষপাড়ামারাতিপর গ্রামে। জন্মতারিখ ২৮ ভাদ্র, ১৩o ১১ (ইং ১২ সেপ্টেম্বর, ১৮৯৪)। তাঁর পৈতৃক নিবাস যশোহর জেলার (বর্তমানে ২৪ পরগণা জেলার) অন্তভুক্ত বনগ্রাম মহকুমায় অবস্থিত ইছামতী নদীতীরস্থ ব্যারাকপার গ্রাম। তাঁর পিতার নাম মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় শাস্ত্রী, পেশা ছিল। কথকতা ; মাতা মণিালিনী দেবী। মহানন্দ কিছ পরিমাণে ভবঘরে ও উদাসীন প্রকৃতির লোক ছিলেন বলে সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা অজান করতে পারেন নি-অজন করার চেন্টাও বোধ হয় করেন নি। পিতামাতার পাঁচটি সন্তানের মধ্যে বিভূতিভূষণই সব জ্যেষ্ঠ। তাঁর শিক্ষা শরা হয় গহে পিতার নিকটে। তারপর সবগ্রামে ও বিদেশে কয়েকটি পাঠশালায় কিছদিন করে পড়ার পর বনগ্রাম উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়ে ভতি হন। তিনি সেখানে অবৈতনিক ছাত্র রাপে পড়ার অনািমতি পেয়েছিলেন। যখন তিনি অস্টেম শ্রেণীর ছাত্র সেই সময়ে তাঁর পিতৃবিয়োগ হয়। নানা দঃখকন্টের মধ্য দিয়ে তিনি ১৯১৪ খ্রীস্টাব্দে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯১৬ খন্টাব্দে তিনি কলিকাতার রিপন কলেজ (বর্তমানে সমরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে প্রথম বিভাগে আই. এ. পাস করেন এবং ১৯১৮ খন্ডটাব্দে ঐ কলেজ থেকেই ডিসটিংশনে বি, এ, পাস করেন। এর পর তিনি এম. এ. ও ল ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন বটে, কিন্তু নানা কারণে আর অধিকদর লেখাপড়া করা সম্পভব হয় নি। তৃতীয় বার্ষিক শ্রেণীতে পড়ার সময় বিভূতিভূষণের সঙ্গে বসিরহাটের মোন্ডার কালীভূষণ মখোপাধ্যায়ের কন্যা গৌরী দেবীর বিবাহ হয়। কিন্তু এর মাত্র এক বৎসর পরেই গৌরী দেবীর অকালম,তু ঘটে। সস্ত্রীর মাতুর পর কিছদিন তিনি প্রায় সঙ্ক্যাসীর জীবন যাপন করেন। এই দীঘটনার বহদিন পরে ১৩৪৭ সালের ১৭ অগ্রহায়ণ (ইং ৩ ডিসেম্বর, ১৯৪০) ফরিদপর জেলার অর্ণত গত ছয়গাঁও নিবাসী ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা রমা দেবীকে তিনি বিবাহ করেন । বিবাহের সাত বৎসর পরে তাঁর একমাত্র সন্তান তারা দাস (ডাকনাম বাবােল) জন্মগ্রহণ করে। ইত্যবসরে তিনি হগলি জেলার জাঙ্গিপাড়ায় মাইনর সকলে শিক্ষকের চাকুরি গ্রহণ করেন এবং তারপর ২৪ পরগণার হরিনাভি গ্রামের উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এইখানেই তাঁর সাহিত্যিক জীবন শহর হয় তাঁর প্রথম রচনা উপেক্ষিতা’ নামক গল্পটি রচিত ও ১৩২৮ সালের মাঘ সংখ্যা প্রবাসী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এরপর কিছুদিন তিনি 'গোরক্ষণী সভা'-র প্রচারকের চাকুরি গ্রহণ করে বাংলা, আসাম, ত্রিপরা ও আরাকানের বাহপথানে ভ্ৰমণ করেন। তারপর তিনি খেলাতচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে কিছুদিন সেক্রেটারীর কাজ্ঞ ও গহশিক্ষকতা করার পর খেলাত ঘোষ এস্টেটের অ্যাসিসটাণ্ট ম্যানেজার নিযক্ত হন এবং উক্ত জমিদারির ভাগলপাের বিভাগের ভারপ্রাপ্ত হয়ে ঐ শহরের ‘বড় বাসা’ নামক গহে। অবস্থান করেন। এই ভাগলপাের-প্রবাসকালেই তাঁর আমার উপন্যাস “পথের পাঁচালী’ রচিত হয়। দ্বিতীয়বার বিবাহের পতবে ১৯৩০ খন্টাব্দের পর থেকেই বিভূতিভূষণ বিহারের ঘাটশিলা ও গালডি অঞ্চলের প্রতি আকৃভাট হতে আরম্পর্ভ করেন। এর কিছুদিন পরে তিনি ঘাটশিলায় একটি বাড়ী ক্ৰয় করেন এবং প্রথমা পত্রীর দািমতিরক্ষার উদ্দেশ্যে তার নামকরণ করেন ‘গৌরীকুঞ্জ’। ক্ৰমে ঘাটশিলা তাঁর অতিপ্রিয় স্থান হয়ে দাঁড়ায়-- অবসর পেলেই সেখানে এসে কিছদিন কাটিয়ে যেতেন। (;