পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবরাত্রির কাব্য S\o হতে উৎসারিত হতে পথ পেত না, হেরম্বের ডাকেও আজ তা সাড়া দিতে চায় না। সে ঝিমিয়ে পড়েছে, হেরম্বের কাছ থেকে গিয়েছে সরে। দুরে নয়, অন্তরালে । সেদিনের মেঘ-মেদুর আকাশের মত কোথা থেকে সে একটি সজল বিষগ্ন আবরণ সংগ্ৰহ করেছে, ভালবাসার পাখায় ভর করে হেরম্বের মন উৰ্দ্ধে, বহু উৰ্দ্ধে উঠেও অবারিত নীল আকাশকে খুজে 2stg FN | এতদিন হেরম্ব কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। আজ সে প্রশ্ন করল, “তোমার কি হয়েছে, আনন্দ ?” “আমার অসুখ করেছে।” হেরম্ব হতবাক হয়ে গেল। তার প্রশ্নের জবাবে এই যদি আনন্দের বক্তব্য হয়, তার ভালবাসাকে শুধু এই কৈফিয়ৎ যদি আনন্দ দিতে চায়, তবে আর কিছু তার জিজ্ঞান্ত নেই। সে কি জানে না। আনন্দের অসুখ করে নি । গুরুতর পরিশ্রমের কাজে মানুষ যে ভাবে ক্ষণিকের বিরাম নেয়, চন্দ্ৰন ঘষা বন্ধ করে আনন্দ তেমনি শিথিল অবসন্ন ভাবে মন্দিরের মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসল। বলল, “মাথাটা ঘুরছে, বুক ধড়ফড় করছে-” নিস্ক্রিয় অবসাদে হেরম্ব মাথা নেড়েও সায় দিল না । “-আর মন কেমন করছে। চন্দনটা ঘষে দেবে ?” আনন্দের বিষন্নতার সমগ্ৰ ইতিহাস এইটুকু। হয়ত এর বিশদ ব্যাখা ছিল ; কিন্তু আজও, এক পুণিমা থেকে আরেক অমাবস্তা পৰ্য্যন্ত আনন্দের হৃদয়ে অতিথি হয়ে বাস করার পরেও, বিশ্লেষণে যা ধরা পড়ে না, শুধু অনুমান দিয়ে আবিষ্কার করে তাকে গ্ৰহণ করার শক্তি হেরম্বেদ