পাতা:দিল্লী চলো - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ৯। আমরা যখন ব্রহ্ম থেকে ভারতে অগ্রসর হব, তখন পিছন থেকে চুংকিং আমাদের আঘাত করতে পারবে—এরূপ কোন আশঙ্কা নেই।

 ১০। আমাদের নেতৃত্বভার নিজেদের এমন একটি গবর্নমেণ্টের উপর, যার পিছনে নয়টি মিত্রশক্তির স্বীকৃতি ও সমর্থন আছে।

 ১১। সাধারণ যুদ্ধ-পরিস্থিতি আমাদের অনুকূল; আমরা ইউরোপীয় যুদ্ধের উপর নির্ভরশীল নই। ভবিষ্যতে ইউরোপে যাই ঘটুক না কেন, আমরা জয়লাভ করবই।

 সর্ব্বশেষ হলেও এটা কোন অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয় যে, আমরা বিপক্ষীয়দের এবং নিজেদের শক্তির তারতম্য জানি। আমরা ন্যায় সত্য এবং জন্মস্বত্ব স্বাধীনতার জন্যে সংগ্রাম করছি—এ চেতনা আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে। মিত্রশক্তির মনে সেরূপ কোন প্রেরণা নেই। কাজেই শেষ পর্য্যন্ত যুদ্ধ করার জন্য যে সঙ্কল্প আমরা করেছি, তা অনমনীয়। তা ছাড়া, আমরা নিজেদের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার পূর্ণ মূল্য দিতে প্রস্তুত।

 বক্তৃতা শেষ করার পূর্ব্বে বর্ত্তমানে ইন্দোব্রহ্ম-সীমান্তে এবং ভারতের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে সে সম্বন্ধে কয়েকটি কথা বলব। এই অভিযান সম্বন্ধে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়, এর ফলে বৃটিশরা ব্রহ্ম পুনরুদ্ধারের সমস্ত পরিকল্পনা চিরদিনের মতো শিকেয় তুলতে বাধ্য হয়েছে। নিজেদের মুখ রক্ষার জন্যে বৃটিশরা এখন বলছে যে, আমরা দিল্লী পৌঁছুতে পারি নি। তারা আমাদের দিল্লী প্রবেশের কাল্পনিক তারিখ পর্য্যন্ত নির্দ্দেশ করছে।

 বন্ধুগণ! শত্রুর শক্তি যে কম করে দেখবে সে মূর্খ। আরাকানে, কালাদন ও হাকা অঞ্চলে, টিড্ডিম অঞ্চলে, মণিপুর এবং আসামে বিপক্ষীয়দের বহু বিমিশ্র বাহিনী আমরা দেখেছি। আমরা বহু আগেই যা ভেবে রেখেছি তাই সত্যি। আমাদের চেয়ে তাদের রেশন বেশী, সমরসজ্জা উন্নত ধরণের; কেন না তারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে ভারতবর্ষের সম্পদ জড় করছে। তা সত্ত্বেও আমরা সর্ব্বত্র তাদের পরাজিত

১০৩