পাতা:দুই বোন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বোন
২৯

যত কিছু আবিষ্কার তাই আলোচনা করছে উলটে পালটে, পরীক্ষা করছে, আর ক্ষতি করছে নিজের পসারের। অত্যন্ত অবজ্ঞা করছে তাদের যাদের পসার জমেছে। বলত, মূর্খেরা লাভ করে উন্নতি, যোগ্যব্যক্তিরা লাভ করে গৌরব। কথাটা সংগ্রহ করেছে কোনো একটা বই থেকে।

 অবশেষে একদিন রাজারাম ঊর্মিকে বললেন, “ভেবে দেখলুম, আমাদের হাসপাতালে তুই নীরদের সঙ্গিনী হয়ে কাজ করলেই কাজটা সম্পূর্ণ হবে আর আমিও নিশ্চিন্ত হোতে পারব। ওর মতো অমন ছেলে পাব কোথায়।”

 রাজারাম আর যাই পারুন হেমন্তের মতকে অগ্রাহ্য করতে পারতেন না। সে বলত মেয়ের পছন্দ উপেক্ষা ক’রে বাপমায়ের পছন্দে বিবাহ ঘটানো বর্বরতা। রাজারাম একদা তর্ক করেছিলেন, বিবাহ ব্যাপারটা শুধু ব্যক্তিগত নয়, তার সঙ্গে সংসার জড়িত, তাই বিবাহে শুধু ইচ্ছার দ্বারা নয় অভিজ্ঞতার দ্বারা চালিত হওয়ার দরকার আছে। তর্ক যেমনি করুন অভিরুচি যেমনি থাক্ হেমন্তের ’পরে তাঁর স্নেহ এত গভীর যে তার ইচ্ছাই এ পরিবারে জয়ী হোলো।