বিমুক্তিলাভ করিয়া, বিমলার প্রথম কার্য্য বীরেন্দ্রসিংহকে সংবাদ-দান; উর্দ্ধশ্বাসে বীরেন্দ্রের শয়নকক্ষাভিমূখে ধাবমান হইতেন।
অর্দ্ধপথ যাইতে না যাইতেই “আল্লা—ল্লা—হে।” পাঠান-সেনার চীৎকারধ্বনি তাহার কর্ণে প্রবেশ করিল।
“এ কি পাঠান-সেনার জয়ধ্বনি?” বলিয়া বিমলা ব্যাকুলিত হইলেন। ক্রমে অতিশয় কোলাহল শ্রবণ করিতে পাইলেন;—বিমলা বুঝিলেন, দুর্গবাসীরা জাগরিত হইয়াছে।
ব্যস্ত হইয়া বীরেন্দ্রসিংহের শয়নকক্ষে গমন করিয়া দেখেন যে, কক্ষমধ্যেও অত্যন্ত কোলাহল; পাঠান-সেনা দার-ভগ্ন করিয়া কমধ্যে প্রবেশ করিয়াছে; বিমলা উঁকি মারিয়া দেখিলেন যে, বীরেন্দ্রসিংহের মুষ্টি দৃঢ়বদ্ধ, হস্তে নিষ্কোষিত অসি, অঙ্গে রুধিরধারা। তিনি উন্মত্তের ন্যায় অসি ঘূর্ণিত করিতেছেন। তাঁহার যুদ্ধোদ্যম বিফল হইল; একজন মহাবল পাঠানের দীর্ঘ তরবারির আঘাতে বীরেন্দ্রের অসি হস্তচ্যুত হইয়া দূরে নিক্ষিপ্ত হইল; বীরেন্দ্রসিংহ বন্দী হইলেন।
বিমলা দেখিয়া শুনিয়া হতাশ হইয়া তথা হইতে প্রস্থান করিলেন।