পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
দুর্নীতির পথে

প্রকাশ করে। অল্পবয়স্ক মৃতদার পুরুষের ন্যায় তাহাদেরও পুনর্ব্বিবাহের অধিকার আছে। লোকমত এমনভাবে গঠন করা দরকার, যাহাতে বাল্যবিবাহ অসম্ভব হইয়া উঠে। আমাদের অস্থিরচিত্ততা, কঠিন ও অবিরাম শ্রমসাধ্য কাজে অনিচ্ছা, শারীরিক অযোগ্যতা খুব জাঁকজমকের সহিত আরব্ধ অনুষ্ঠানেরও অসফল, এবং মৌলিকতার অভাব প্রভৃতির মূলে রহিয়াছে অত্যধিক বীর্য্যনাশ। আমি আশা করি, যুবকেরা ইহা বলিয়া আত্মবঞ্চনা করিবে না যে, সন্তানোংপত্তি না হইলে শুধু ইন্দ্রিয়সেবার ফলে কাহারও কোনো অনিষ্ট হয় না, ইহা লোককে দুর্বল করে না। আমি বলি সন্তানোৎপত্তির উদ্দেশ্যে ইন্দ্রিয়সেবা করিলে যে দুর্বলতা ও ক্লান্তি আসে, সন্তাননিরোধ করার উদ্দেশ্যে কৃত্রিম উপায় অবলম্বন করিয়া ইন্দ্রিয়সেবা করিলে, তাহা অপেক্ষা অনেক অধিক শক্তি ক্ষয় হয়।

 মন নরককে স্বর্গে এবং স্বৰ্গকে নরকে পরিণত করিতে পারে। যদি আমরা মনে করিতে আরম্ভ করি যে, ইন্দ্রিয়সেবা দরকার, ইহা অনিষ্টকর অথবা পাপজনক নহে, তবে আমরা নিরন্তর ইহা তৃপ্তি করিতে চেষ্টা করিব এবং ইহাকে দমন করা অসম্ভব হইবে। পরন্তু যদি আমরা বিশ্বাস করিতে পারি যে, ইন্দ্রিয়সেবা অনিষ্টকর, পাপজনক এক অনাবশ্যক ও ইহা সংযত করা যায়, তবে আমরা দেখিব যে পূর্ণভাবে ইন্দ্রিয়দমন করা সম্ভব। প্রমত্ত পশ্চিম নৃতন সত্য ও মানবের তথাকথিত স্বাধীনতার নামে স্বৈরাচারের তীব্র মদিরা এ দেশে পাঠাইতেছে, তাহা হইতে আমাদিগকে আত্মরক্ষা করিতে হইবে। অন্যপক্ষে যদি আমরা আমাদের পূর্ব্বপুরুষদের বাণী ভুলিয়া গিয়া থাকি, তবে পশ্চিমের জ্ঞানীদের যে মূল্যবান অভিজ্ঞতা সময় সময় আমাদের নিকট চুঁয়াইয়া পৌঁছে, আমরা যেন সেই ধীর স্থির বাণী শুনি।