পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
দুর্নীতির পথে

৫। মন

দেহের উচ্চতর ক্রিয়াসকল বিশেষ করিয়া মনের ক্রিয়া, যে সকল অঙ্গের সাহায্যে হইয়া থাকে, তাহাদের পর্য্যবেক্ষণ করিলে জনন এবং অন্তর্জননের মধ্যে কতখানি নিশ্চল বিরোধ তাহা বুঝা যায়। দেহের অন্যান্য অঙ্গের ন্যায় ইচ্ছাপেক্ষক্রিয়াবান্ (মস্তিষ্ক-মেরুদণ্ডমূলক) এবং ইচ্ছানিরপেক্ষক্রিয়াবান্ এই উভয় প্রকার স্নায়ুমণ্ডলী যে সকল কোষের দ্বারা গঠিত, মূলে সেগুলিও বীজকোষ এবং নিগূঢ় প্রাণকেন্দ্র হইতে আহৃত। এই সকল কোষ অনবরত ভাগে ভাগে বিভিন্ন ক্রিয়ার জন্য স্নায়ুমণ্ডলীর বিভিন্ন গ্রন্থিপুটে যাইতেছে। বলা বাহুল্য বহুসংখ্যক কোষ সর্ব্বদা মস্তিষ্কেও যাইতেছে। এই সকল বীজকোষের অন্তর্জনন ক্রিয়া এবং উর্দ্ধমুখী গতিরোধ করিয়া তাহাদের জনন অথবা কেবল সম্ভোগের কার্য্যে নিযুক্ত করিলে অঙ্গ সকল তাহাদের ক্ষয়নিবারক প্রাণশক্তি হইতে বঞ্চিত হয় এবং ধীরে ধীরে শেষ পর্য্যন্ত নিস্তেজ হইয়া যায়। এই সকল শারীরিক তত্ত্ব হইতে যে যৌননীতি পাওয়া যায় তাহার বিধি—পূর্ণ সংযম, অন্তত পক্ষে পরিমিত সন্তোগ। যাহা হউক সংযম নীতির মূল কোথায় তাহা দেখা গেল।

 একটি উদাহরণ করুন। ভারতীয় দার্শনিকগণ বলিতেন সংযম মানসিক ও আধ্যাত্মিক শক্তি বৃদ্ধি করে। হিন্দুধর্ম ও সমাজের সহিত যাহারা সামান্য পরিচিত, তাহারা জানেন হিন্দুরা পূর্ব্বে তপস্যা করিত এবং এখনও কেহ কেহ করে। এই তপস্যার উদ্দেশ্য দুটি—শরীরের শক্তিরক্ষা ও বৃদ্ধি করা এবং অলৌকিক মানসিক শক্তি অর্থাৎ সিদ্ধিপ্রাপ্ত হওয়া। প্রথমটির নাম হঠযোগ। হঠযোগীরা কেবল দৈহিক পূর্ণতাকে লক্ষ্য করিয়া অসাধারণ শারীরিক শক্তিসকল লাভ করিয়া থাকেন। অপটির নাম রাজঘোগ; ইহার লক্ষ্য মানসিক ও আধ্যাত্মিক উৎকর্ষ