পাতা:দুর্নীতির পথে - বিনয়কৃষ্ণ সেন.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মন
৬১

সাধন। তথাপি এই দুই প্রকার যোগের ভিতর একই শারীর-নীতি আছে। প্রাচীন ভারতের শ্রেষ্ঠ মানবতত্ত্ববিদ পতঞ্জলির যোগদর্শনে এবং তৎপ্রভাবান্বিত অন্যান্য গ্রন্থে ইহা উক্ত হইয়াছে।

 যোগসাধনের যে সব বাধা আছে, রাগ তাহাদের মধ্যে তৃতীয় (২,৭)। পতঞ্জলি বলেন, সুখ অথবা সুখলাভের উপায় সম্বন্ধে আকাঙ্খা, তৃষ্ণা অথবা ইচ্ছাকে রাগ বলে। সুখের সহিত দুঃখ ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকে বলিয়া যোগীর সুখ ত্যাগ করা উচিত (২,১৫)। এ পর্য্যন্ত যোগদর্শনে মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কামবাসনার আলোচনা হইয়াছে; পরের সূত্রসকলে শরীর-বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ইহা আলোচিত হইয়াছে।

 যমের সাধনা যোগাভ্যাসের প্রথম ধাপ। যম পাঁচ প্রকার—অহিংসা, সত্য, অস্তেয়, ব্রহ্মচর্য্য ও অপরিগ্রহ। দেখিয়া আশ্চর্য্য হইতে হয় যে, যাহারা যোগী বলিয়া নিজেদের পরিচয় দেয় তাহারা হয় চতুর্থ যম কি তাহা জানে না অথবা তাহার কথা বলে না। ব্রহ্মচর্য্যই চতুর্থ যম।

 পতঞ্জলি মুনির মতে ব্রহ্মচর্য্য পালন করিলে যথেষ্ট লাভ হয়। তিনি বলেন, যিনি ব্রহ্মচর্য্যে প্রতিষ্ঠিত তাঁহার বীর্য্য বা শক্তিলাভ হয়; বিভিন্ন প্রকার সিদ্ধি তাঁহার হস্তগত হয়। তিনি শ্রোতাদের অন্তরে তাঁহার নিজের চিন্তা অনুপ্রবেশ করাইতে পারেন। এরূপ দুর্লভ সিদ্ধি যাঁহার লাভ হয় তাঁহার মত সৌভাগ্য কাহার?

 শ্রীযুক্ত মণিলাল দ্বিবেদী নামক বর্ত্তমান ভারতের জনৈক পণ্ডিত বলেন, “শরীরবিজ্ঞানের সুপরিচিত নিয়ম এই যে, বুদ্ধির সহিত শুক্রের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ আছে। আমরা বলিতে পারি যে, আধ্যাত্মিকতার সহিতও শুক্রের এইরূপ সম্বন্ধ আছে। একরূপ অমূল্য বস্তুর অপব্যয় না করিলে