পাতা:দৃষ্টিপ্রদীপ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারা ওর কেউ নয় । তারা ওকে বুঝবে না। তার চেয়ে আমার মনের দেশে ও আমার অনেক আপন, আমার নিকটতম প্ৰতিবেশী। ভাবলাম মালতীকে সব কথা বলি। বলি, মালতী, সংসারে তোমারও কেউ নেই, আমারও কেউ নেই। তুমি সাধু বাপের সতী মেয়ে, তোমার সংসা-বিরাগী আপন-ভোলা বাপের আশীৰ্বাদ ওই শু্যামসুন্দর। তমালতারু ছায়ার মত তোমাকে ঘিরে রেখেছে জানি, কিন্তু আমিও ঘে-সন্ধানে বেরিয়েছি, সে-সন্ধান সফল হবে না। তুমি যদি পাশে এসে না দাড়াও । কিন্তু তার বদলে বললাম-ভাল কথা মালতী, তোমাকে অনেক দিন থেকে বলব ভাবচি। উদ্ধব বাবাজীকে ব’লে আমায় এখানে একটা পাঠশালা করার ব্যবস্থা ক’রে দিতে পাের ? “আমার কিছু হয় তা থেকে । মালতী এসে দাওয়ায় পা পুলিযে বসল। ওর মুখের পাশটা দেখা যাচ্চে, একটা সুকুমার লাবণ্য যেন ওর মুখের চারিপাশ ঘিরে আছে-এক ধবনের সুন্দর মুখ আছে, মনে হয় ধেন তাদেব মুখের চারিপাশে একটা অদৃশ্য সৌন্দয্যজালের বেষ্টনী রয়েছে, যখন কথা না বলে চুপ ক’বে থাকে, তখন তাদের মুখের এই ভাবটা সুস্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠেমালতীব মুখ সেই ধরনেব। আমার কথায় ওর মুখচোখ চিন্তাকুল হয়ে উঠল, যেন কি একটা বিষম সমস্যা তাব ঘাড়ে আমি চাপিযে দিয়েছি। বললে- কিন্তু এখানে যা ভেবে কববেন, তার কিছু হবে না । এখানে মাইনে দেবে না কেউ । এখানে ভদ্রলোক নেই । স্বাদবাসিনীতে কামারেবা আছে, ওদেব কলকাতায় গাডির কারখানা, সেইখানেই থাকে। সবকারের তিন বছব পাবে এসেছিল পূজোব সময় দেশে।--তারপর হেসে ছেলেমানুষের ম, ৩ ঘাড দুলিয়ে বললে-ধান নিয়ে ছেলে পডাতে পারবেন ? এদেশে মাইনের বদলে ধান দেয় । নাঃ, সে-সব আপনাব কাজ নয। তা আপনি তো এখানে জলে পড়ে নেই ? হাতে কিছু নেই, একদিন হবেই। যতদিন না হয, এখানে থাকুন। আপনাকে এ অবস্থায় *োথাও যেতে দেব না। এখানে থাকতে কষ্ট হচ্ছে বোধ হয়, না ? সত্যি কথা বলুন। -- সত্যি কথা কি সব সময় বলা যায় মালতী ? — কেন, বলুন না কি বলবেন ? -এখন থাক, আমাব কাজ আছে । শোন, উদ্ধবদাসের একতারাটা এখানে রইল, 1’লো তাকে । তোমাব জন্যে সারানো হ’ল না । মালতী অবাক হয়ে চেয়ে থেকে বললে-কোথায় যাবেন ? শুনুন। বা রে, অদ্ভুত মানুষ কিন্তু আপনি ! বাইরের মাঠে এসে দাড়িয়ে মনে হ’ল আকাশ-বাতাসের কাপ ও রং যেন এই এক মুহূৰ্ত্তের মধ্যে বদলে গেছে আমার চোখে । মালতী ও-কথা বললে কেন ধে, আপনাকে এ