পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 প্রাণভরা সরলতা, নেত্রে উচ্ছ্বসিত প্রেমরাশি, মুখভরা হাসি, হৃদয়ভরা স্বার্থকলঙ্ককলুষশূন্য অনাবিল, পবিত্রপ্রেম, পত্নীর ধর্ম্মাহ্ণমোদিত কর্ত্তব্য, স্বামী-হৃদয়ের এক সময়ের দুর্ব্বলতাজনিত পদস্খলনের অপরাধ গোপন, এই সবই ত তাহার পত্নীত্বের কর্তব্য। হায়! কি করিয়া সে তাহার স্বামীকে এই ছলনাময়ী স্বৈরিণীর কবল মুক্ত করিবে? কে তাহাকে সে পথ দেখাইয়া দিবে।

 পরক্ষণেই সে ভাবিল—চেষ্টায় না হয় কি? সাধনার ফলেই যে সিদ্ধিলাভ। এই পবিত্র আবাস মন্দিরের অধিষ্ঠিতা দেবী সে। সেই গৃহের রাজরাজেশ্বরী সে। স্বামী তাহার। তাহার পত্নীত্বের একটা কর্ত্তব্য আছে, দাবি আছে, অধিকার আছে—সে অধিকার তাহাকে জীবন পণ করিয়াও বজায় রাখিতে হইবে। নিজের সকল সুখ স্বার্থ, বিলাসভোগ সবই দমন করিয়া সতর্ক প্রহরীর মত, এই স্বামীকে সর্ব্বদা চোখে চোখে রাখিতে হইবে। প্রতি কথায় প্রতি কার্য্যে বুঝাইতে হইবে, যে এই নবাব সুজা খাঁ তাহার সর্ব্বস্ব। পতির উপর স্বাধ্বী পত্নীরই ষোল আনা অধিকার।

 এইরূপ চিন্তায় আনার মনে মনে একটা সাহস পাইল। অন্ধকারময় পথে সে যেন একটু আলোক ছটা দেখিতে পাইল। তাহার হৃদয়ে নারীর স্বভাবসিদ্ধ আত্মগরিমা, পত্নীয় রাজ-রাজেশ্বরীত্ব ভাব ফুটিয়া উঠিল। সে অতি ধীরপদে, অতি সন্তর্পণে তাহার কক্ষ হইতে বাহির হইয়া সুজাখাঁ যে কক্ষে

১১৫