পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

বাহারের সহিত প্রবেশ করিলেন, ঠিক তাহার পার্শ্ববর্ত্তী কক্ষে আত্ম গোপন করিল।

 সে দেখিল, নির্জ্জন কক্ষ মধ্যে নবাব সুজা খাঁ চিন্তামগ্নভাবে পাইচারি করিতেছেন। তাঁহার গভীর চিন্তার বিষয়টা কি, তাহা যেন আভাসে ইঙ্গিতে বুঝিতে পারিয়াই, সেই শয়তানী বাহারবানু, এক ক্ষুদ্র সোফার উপর বসিয়া মৃদু হাস্য করিতেছে। অবশ্য চিত্তামগ্ন নবাব সুজা খাঁ, তাহার এ অবজ্ঞাময় অর্থপূর্ণ হাসিটি দেখিতে পাইতেছিলেন না।

 কক্ষমধ্যে কয়েকখানি উজ্জ্বল মুকুর। সমগ্র কক্ষ উজ্জল দীপালোকিত। সুগন্ধি দীপের কম্পিত আলোকমালার চঞ্চল প্রতিবিম্ব, সেই সব মুকুরে পড়িয়াছে। নবাব সুজা খাঁ বাহারবানুর দিকে পিছন করিয়া সেই মুকুরের দিকে চাহিয়া আছেন।

 বাহারবানু মনে মনে কি ভাবিয়া আসন ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। তাহার বিচিত্র সৌন্দর্য্যভরা, লাবণ্যমাথা মুখখানির প্রতিবিম্ব নবাব সুজা খাঁর সন্মুখস্থ দর্পণের উপর পড়িল। নবাব সুজা খাঁ, সে লাবণ্যময় মূর্ত্তির ছায়া, দর্পণে দেখিয়া একটু মৃদু হাসিলেন। আর সেই দর্পণগাত্রাবলম্বী ছায়ামূর্ত্তিও যেন তাঁহাকে ব্যঙ্গ করিয়া হাসিয়া উঠিল।

 নবাব মুখ ফিরাইবামাত্র, দেখিলেন বাহারবানু তাঁহার সন্মুখে দাঁড়াইয়া। তিনি তিরস্কার পূর্ণস্বরে বলিলেন—“বাহারবানু! তোমার অনেক অপরাধ আমি ইতি পূর্ব্বে মার্জ্জনা করিয়াছি।

১১৬