নবাব বেগম আপনার কথা বলিতেছিলেন। বাস্তবিক আপনি বড় নিষ্ঠুর!
মীর লতিফ। কেন? আমার অপরাধ?
জুমেলি। চিঠি পত্রের আদান প্রদান বন্ধ করিলেন কেন? কুশল সংবাদের আদান প্রদানে দোষ কি?
মীর লতিফ একটী মর্ম্মভেদী দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া বলিল “তা বটে—কিন্তু এখন আর এরূপ পত্র ব্যবহারটা সঙ্গত নয়।”
চতুরা জুমেলি, মীর লতিফের মনের কথা বুঝিয়া ও সম্বন্ধে আর কোন কিছু বলিল না। কেবল মাত্র বলিল—“আপনি এখন আগরাতেই থাকবেন ত?”
মীর লতিফ। না— সরকারের জরুরি পত্রবাহক রূপে একখানি গোপনীয় পত্র আমাকে সুলতান দারার নিকট আনিতে হইয়াছে। পত্রের জবাব বোধ হয় এক সপ্তাহের মধ্যে পাইব। জবাব পাইলেই আমাকে লাহোরে চলিয়া যাইতে হইবে।”
জুমেলি মুহুর্ত্ত মাত্র কি ভাবিয়া বলিল—“বেগমের সহিত একবার দেখা করিবেন না?”
মীর লতিফের মুখমণ্ডল আরক্ত ভাব ধারণ করিল। আনারউন্নিসার সহিত দেখা করিতে তাহার সাহস হইল না। বাল্যের—কিশোরের— যৌবনের সকল কথাই যেন প্রত্যক্ষ স্বপ্নের স্মৃতির মত, তাহার মনে ধীরে ধীরে ফুটিয়া উঠিল।
মীর লতিফ কম্পিত স্বরে বলিল— “সেটা কি ভাল? নবাব সুজা বেগ কি মনে করিবেন?”
১৫৯