পাতা:দেওয়ানা - হরিসাধন মুখোপাধ্যায়.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দেওয়ানা

 তাহারই সুখের জন্য, সে যে খুব দূরে সরিয়া দাঁড়াইয়াছে। তাহার এতটা আত্মত্যাগের কি এই শোচনীয় পরিণাম?

 কি একটা প্রচ্ছন্ন দুঃখ, অবক্তব্য মনের বেদনায়, আনার বড়ই অধীর হইয়া পড়িয়াছে। সেটা যে কি, তা না জানিলে তার প্রতিকার করাও অসম্ভব।

 এই জন্য আনারের হস্তধারণ করিয়া স্নেহ-পূর্ণ স্বরে মীর লতিফ্ বলিল,—“আনার উন্নিসা! তোমার এ মন কষ্টের কারণ কি?”

 এ অযাচিত সহানুভূতির প্রবল শক্তি, আনারের হৃদয়ের নিভৃতকন্দরে গিয়া খুব জোরে আঘাত করিল। নবাব পত্নী হইবার পর তাহার ও মীর লতিফের মধ্যে যে একটা বিরাট ব্যবধান আসিয়া পড়িয়াছিল, তাহা সেই মুহূর্ত্তে সরিয়া গেল।

 অভাগিনী আনার উন্নিসা তখন ধীরে ধীরে বাহারবানু ঘটিত সমস্ত ব্যাপার, মীর লতিফকে বলিয়া ফেলিল। সে দিন যাহা ঘটিয়াছিল,—তাহাও সে বলিতে ভুলিল না।

 মীর লতিফ ধীরভাবে সমস্ত কথাগুলি শুনিয়া বুঝিল,—“এই সর্ব্বনাশিনী বাহারবানু বর্ত্তমান থাকিতে, নবাব সুজাবেগ কখনই তাহার ছলনাপাশ হইতে মুক্ত হইতে পারিবেন না। আর তাহা না হইলে, আনার উন্নিসাও এ জীবনে সুখী হইবে না। লতিফ্ চায় আনারের সুখ। সে চায়—আনারের সদা প্রফুল্ল হাস্যমুখ।

 অসম্ভব আত্মত্যাগ করিয়া, আনারকে চিরসুখী দেখিবার জন্য লতিফ যে তাহার সম্মুখ হইতে দূরে সরিয়া দাঁড়াইয়াছিল। এখন সে

১৬৩